সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় চলছে দেদারছে রেণু পোনা নিধন। বাইলাগুঁড়া ও সাগরের পোনা নামে প্রায় ২৯ প্রজাতির রেণু পোনা নিধন করছে অসাধু চক্র। এসব রেণু পোনা নিধনের কারণে দেশীয় মাছ বিলুপ্তির পথে। প্রতিদিন অন্তত সহস্রাধিক জেলে রাতদিন পদ্মা-মেঘনার বিভিন্ন স্থান থেকে এসব রেণু পোনা নিধন করছে।
রেণু পোনা নিধনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে জেলে ও আড়তদারসহ বিভিন্ন শ্রেণির লোক। নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা যাদের দায়িত্ব তাদের এ বিষয়ে কোনো তৎপরতা নেই।
চাঁদপুর মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বেশ কয়েক বছর ধরে কিছু জেলে চাঁদপুরের নৌ সীমানায় রেণু পোনা নিধন করছে। অন্যান্য মাছের সঙ্গে প্রায় ২৯ প্রজাতির রেণু পোনা ধরা হচ্ছে। ফলে নদীর ভারসাম্য নস্ট হচ্ছে। নদীতে জেলেরা বেহুন্দি জাল, মশারি জাল, সুক্ষ্ম ফাঁসের জাল দিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির রেণু পোনা মাছ নিধন করে আসছে। মৎস্য বিভাগ ও কোষ্টগার্ড মাঝে মধ্যে অভিযান চালালেও অভিযানের কয়েক ঘণ্টা পর আবার শুরু হয় পোনা শিকার।
এ দিকে গত কয়েকদিন চাঁদপুর শহরের পাড়া-মহল্লাগুলোতে টুপরি ও ভ্যানে করে রেণু পোনা বিক্রি করতে দেখা গেছে। অসাধু চক্রের কারণে নদীর এসব মাছ এখন হুমকির মুখে।
চাঁদপুর সদরের হানারচর, পুরান বাজারের হরিসভা, রনাগোয়াল, লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের বহরিয়া নদীর পাড়, তরপুরচন্ডী ইউনিয়নের আনন্দ বাজার ও রাজরাজেস্বরের বিভিন্ন এলাকায় এসব রেণু পোনা নিধন হচ্ছে। আর প্রতিকেজি পোনামাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়।
আফজাল ও নাছিরসহ কয়েকজন জেলে বলেন, নদীতে আগের মতো মাছ নেই, তাই এই মাছ ধরছি। জানি রেণু পোনা ধরা ঠিক না। তারপরও এই মাছের চাহিদা থাকায় আমরা এসব মাছ ধরছি। এ ছাড়া আমাদেরকে কেউ রেণু পোনা ধরতে বাধাও দেয় না।
চাঁদপুর জেলা মৎস্যজীবি লীগের সভাপতি আবদুল মালেক দেওয়ান বলেন, সবাই যে রেণু পোনা ধরে তা না। বাইরে থেকে অনেক জেলে চাঁদপুরে এসে মাছ ধরে নিয়ে যায়। তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. গোলাম মেহেদী হাসান বলেন, অবৈধ মাছ শিকারে আমাদের সব সময় মনিটরিং রয়েছে। সহসাই আমরা নদীতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করব। যাতে করে রেণু পোনা নিধন কমে আসে।