নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল >> সরকারি আদেশ-নির্দেশ উপেক্ষা করে নগর ভবন পরিচালনা, কাউন্সিলরদের সম্মানী ভাতা কম দেওয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহসহ তিন কর্মকর্তাকে লিগ্যাল নোটিস পাঠানো হয়েছে। আজ রোববার (২ জানুয়ারি) দুপুরে সিটি করপোরেশনের সাত জন ওয়ার্ড কাউন্সিলরের পক্ষে সুপ্রিম কোর্ট ও বরিশাল জজ কোর্টের আইনজীবী মো. আজাদ রহমান এই লিগ্যাল নোটিস পাঠান।
বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ ছাড়াও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফারুক হোসেন এবং সিটি করপোরেশনের সচিবকে নোটিস পাঠানো হয়েছে। ১৫ দিনের মধ্যে লিগ্যাল নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে নোটিসে উল্লেখ করা হয়েছে।
বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হুমায়ুন কবির, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৌহিদুল ইসলাম, ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. ফরিদ আহমেদ, ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জিয়াউর রহমান, ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আমির হোসেন বিশ্বাস, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শরীফ মো. আনিছুর রহমান ও ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এনামুল হক বাহার আইনজীবীর মাধ্যমে ওই লিগ্যাল নোটিস পাঠিয়েছেন।
নোটিশে আইনজীবী মো. আজাদ রহমান উল্লেখ করেন, সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের সম্মানী ভাতাসহ অন্যান্য ভাতা মিলিয়ে ৪৩ হাজার ৫০০ টাকা দেওয়া হতো। গত অক্টোবর মাসে তা বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা হয়। কিন্তু অক্টোবর মাস থেকে বর্ধিত সম্মানী ভাতা দেওয়া শুরু হলেও নোটিস দাতা সাতজন ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে দেওয়া হচ্ছে না। একই আইনের অধীনে দায়িত্ব পালন করলেও তাদের সঙ্গে ভিন্ন রূপ আচরণ করা হচ্ছে। ওই সাতজন ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে বর্ধিত ভাতা দেওয়ার অনুরোধ জানানো হলো।
লিগ্যাল নোটিসে আরও উল্লেখ করা হয়, সিটি কর্পোরেশনের প্রথম সভায় ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের সিটি কর্পোরেশনে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। অথচ জনগণের স্বার্থে বিভিন্ন দাপ্তরিক কাজে সিটি কর্পোরেশনে যাওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। এছাড়া স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ব্যতিরেকে এবং ওই সাতজন ওয়ার্ড কাউন্সিলরের রেজুলেশনে স্বাক্ষর ব্যতিরেকে এবং জনস্বার্থ উপেক্ষা করে হোল্ডিং ট্যাক্স কোনো কোনো ক্ষেত্রে হাজার গুণ বাড়ানো হয়েছে। এতে জনগণের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।
রেজুলেশনে স্বাক্ষর না দিলেও ওই সাত কাউন্সিলরকে তাদের ওয়ার্ডের জনগণের কাছে জবাবদিহিতা করতে হচ্ছে। অপরদিকে অযৌক্তিক অভিযোগ তুলে বিপুল সংখ্যক স্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ওএসডি করে রেখে অস্থায়ী কর্মচারীদের গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন, দরপত্র আহ্বান ছাড়াই ব্যক্তি বিশেষকে নগরীর হাট-বাজার ইজারা দেওয়া হচ্ছে। সরকারি আদেশ-নির্দেশ উপেক্ষা করে নগর ভবন পরিচালনা করা হচ্ছে। এতে সিটি করপোরেশনের কার্যক্রমে স্থবিরতা এবং জন অসন্তোষ দিন দিন বাড়ছে।
এসব অভিযোগের জবাব চেয়ে লিগ্যাল নোটিস দেওয়া হয়েছে। ১৫ দিনের মধ্যে এর জবাব দিতে বলা হয়েছে নোটিসে। অন্যথায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’