আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যাত্রার ২১ বছরের আক্ষেপ কাটিয়ে ডিফেন্ডিং টেস্ট চ্যাম্পিয়ন নিউজিল্যান্ড মাটিতে প্রথমবারের মতো কোনো ম্যাচে জয়ের দেখা পেয়েছে বাংলাদেশ। তাও কীনা ক্রিকেটের ধ্রুপদী ফর্মেটে! আর সেই ম্যাচেই জাদুকরী গতি আর কৌশলের নৈপুণ্য দেখিয়ে কিউইদের বিপক্ষে ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন এবাদত। ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৮ রানের বিপরীতে এবাদত নিয়েছেন ৬ টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। তার বোলিং তোপে নিউজিল্যান্ডকে বিপর্যস্ত করে আট উইকেটের অবিস্মরণীয় জয়ের দেখা পেয়েছে বাংলাদেশ।
পুরস্কার হাতে এবাদত বলেছেন, ‘প্রথমে ধন্যবাদ জানাতে চাই আল্লাহকে। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে আমাদের দল ২১ বছর ধরে কোনও ম্যাচ জেতেনি। এবার একটা লক্ষ্য ঠিক করে এসেছিলাম। নিজেদের হাত তুলেছি, আর বলেছি তারা টেস্ট চ্যাম্পিয়ন, আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য তাদের হারানোর উদাহরণ রেখে যেতে হবে।’
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এই টেস্টের আগে এবাদতের বোলিং গড় খুব একটা ভালো ছিল না। ১০ টেস্টে ছিল ১১ উইকেট, গড় ৮১.৫৪! তার গড় নিয়ে ট্রলও হচ্ছিল। সেই এবাদত এক টেস্টে ৭ উইকেট নিয়ে গড় অনেকটাই কমিয়ে এনেছেন। ১১ ম্যাচে ১৮ উইকেট, বোলিং গড় এখন ৫৬.৫৫।
ডানহাতি পেসার জানালেন, এই সাফল্য এমনি এমনি আসেনি, গত দুই বছরে (পেস বোলিং কোচ) ওটিস গিবসনের সঙ্গে আমি কাজ করেছি। ঘরের মাঠে কন্ডিশন সবসময় ফ্লাট থাকে। আমরা এখনও বাইরে কীভাবে বল ও রিভার্স করতে হয়, সেটা শিখছি। আমার সাফল্যের জন্য কিছুটা ধৈর্য ধরতে হয়েছে।’
প্রতিভা অন্বেষণ কার্যক্রম ‘ফাস্ট বোলার হান্ট’ থেকে উঠে এসেছেন এবাদত। বিমানবাহিনীতে চাকরি করা এবাদত ওই দলের হয়ে খেলতেন ভলিবল। ঢাকার ক্রিকেটে তার শুরুটা ২০১৪ সালে সিটি ক্লাবের হয়ে প্রথম বিভাগের ক্রিকেটে। তবে ক্রিকেট সত্তার আসল বিকাশ ঘটেছে রবি পেসার হান্টের মধ্য দিয়ে। তার উদযাপনও অভিনব। কোনও ব্যাটারকে আউট করলেই ‘স্যালুট’ দেন।
এক প্রশ্নের জবাবে এবাদত বলেছেন, ‘আমি বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একজন সদস্য, জানি কীভাবে স্যালুট দিতে হয়। আর ভলিবল থেকে ক্রিকেটে আসার গল্পটা অনেক লম্বা। আমি ক্রিকেটটা উপভোগ করছি, একই সঙ্গে বাংলাদেশ ও বিমানবাহিনীকে প্রতিনিধিত্ব করাটাও।’