দেশে গত কয়েকদিনে প্রাণঘাতী মহামারী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধির ধারায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন রোগীর সংখ্যা বেড়ে হাজার ছাড়িয়ে গেছে। ২৩ হাজার ৪৩৫ জনের নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্ত হয়েছে ১,১৪০ জন। একই সঙ্গে শনাক্তের হার আবার পাঁচ শতাংশ ছুঁই ছুঁই । এসময়ে মৃত্যু হয়েছে আরো ৭ জনের।
ওমিক্রন আতঙ্কের মধ্যে দেশে সপ্তাহ ধরে শনাক্তের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। এরই ধারাবাহিকতায় সংক্রমণ ঠেকাতে গতকাল বেশ কিছু বিধিনিষেধ আরোপের কথা জানিয়েছে সরকার। আগামী সাত দিনের মধ্যে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ৮৫২টি ল্যাবে ২৪ ঘণ্টায় ২৩ হাজার ৪৩৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ১,১৪০ জনের। এ নিয়ে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৫ লাখ ৮৯ হাজার ৯৪৭ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরো ১৯৬ জন। এ নিয়ে মোট সুস্থ ১৫ লাখ ৫০ হাজার ৩৬৪ জন। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ।
আজ শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১৪ সপ্তাহের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর চেয়ে বেশি রোগী এক দিনে শনাক্ত হয়েছিল সর্বশেষ ২৯ সেপ্টেম্বর, সেদিন ১১৭৮ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়ার খবর এসেছিল।
এর আগে সবশেষ ২৩ ডিসেম্বর ৩৮২ জন কোভিড রোগী শনাক্তের খবর এসেছিল। গত ১১ ডিসেম্বর প্রথমবারের মতো দেশে করোনা ভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের সংক্রমণ ধরা পড়ার খবর আসে। এর আগে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনার সংক্রমণ দেখা দেয়। কয়েক মাসের মধ্যে এই ভাইরাস বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত বছরের ৮ মার্চ। এ বছর ৩১ অগাস্ট তা ১৫ লাখ পেরিয়ে যায়। এর আগে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারের মধ্যে ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।
ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ায় চলতি বছর জুন থেকে রোগীর সংখ্যা হু-হু করে বাড়তে থাকে। ২৮ জুলাই একদিনে সর্বোচ্চ ১৬ হাজার ২৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল।
চলতি বছর জুলাই-অগাস্টে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ পায়। ৫ অগাস্ট ও ১০ অগাস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারীর মধ্যে একদিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।
করোনা ভাইরাসের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণের ওই সময়টায় প্রতি পাঁচ দিনে মৃত্যুর তালিকায় ১ হাজার নতুন নাম যোগ হচ্ছিল। সেপ্টেম্বর থেকে সংক্রমণ কমতে শুরু করলে মৃত্যুর গ্রাফও নেমে আসে।
শীতের শুরুতে ইউরোপ-আমেরিকায় নতুন করে সংক্রমণ ও মৃত্যুর বাড়ছে, দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত করোনা ভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন দেশে। তবে বাংলাদেশে পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণে।