বলে রাখা দরকার ঘটনাটা ভূতুড়ে। এই ঘটনার কোনো ব্যখ্যা এখনও পাওয়া যায়নি। আর বিশ্বাসীরা আজও ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সুযোগ পেলেই এই গল্প শোনান। তবে যে যা-ই বলুক, সান্তিয়াগোর ফ্লাইট নম্বর ৫১৩ আজও জবাবহীন ধাঁধাঁ। ১৯৫৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর সান্তিয়াগোর এয়ারলাইন্সের ৫১৩ নম্বর বিমান মাটি থেকে আকাশে ওড়ে। তারপর হঠাৎই বেপাত্তা হয়ে যায়।
আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়, জার্মানির পশ্চিম প্রান্তের শহর আকেন থেকে ব্রাজিলের পোর্তো অলেগ্রিতে যাচ্ছিল বিমানটি। সাধারণ হিসেবে ১৮ ঘণ্টার যাত্রাপথ। তবে ফ্লাইট নম্বর ৫১৩ নাকি গন্তব্যে পৌঁছেছিল ৩৫ বছর পর!
তার আগে শেষবার বিমানটিকে দেখা যায় ১৯৫৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর, আকশে ওঠার ঘণ্টা খানেক পরে। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী অটলান্টিক মহাসাগরের ওপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছিল বিমানটি। ব্যাস তারপর আর তার খোঁজ পাওয়া যায়নি।
নিখোঁজ বিমানটিকে দু’বছর ধরে খোঁজা হয়। সমুদ্রে নামানো হয় ডুবুরি। তবে ফ্লাইট ৫১৩-র একটা টুকরোরও খোঁজ পাওয়া যায়নি। বিমান চালক এবং ক্রু সদস্য-সহ ৯২ জন আরোহী ছিলেন বিমানে। বিমানের সাথে তারাও নিখোঁজ হন। এরপর কয়েক দশক কেটে যায়। বিমান নিখোঁজ হওয়ায় দুর্নামে ব্যবসা গুটিয়ে ফেলতে বাধ্য হয় সান্তিয়াগো এয়ারলাইন্স। বন্ধ করা হয় সন্ধান পর্বও।
তবে শেষ পর্যন্ত খোঁজ পাওয়া যায় বিমানের। ৩৫ বছর পর ব্রাজিলের পোর্তো অলেগ্রির বিমানবন্দরের মাথায় চক্কর কাটতে দেখা যায়। রানওয়েতে নিখুঁত অবতরণও করে সান্তিয়াগো এয়ারলাইন্সের বিমান। অথচ বাস্তবে তখন সান্তিয়াগো এয়ারলাইন্সের কোনও অস্তিত্বই নেই। বিমানবন্দরের তরফে বিমানচালকের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। তবে কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। বাধ্য হয়েই নিরাপত্তারক্ষীদের নিয়ে বিমানটির দরজা খোলানো হয়। ভিতরের দৃশ্য দেখে শিউরে ওঠেন পোর্তো অলেগ্রি বিমানবন্দরের কর্মীরা।
বিমানটির প্রতিটি সিটে সিটবেল্ট বাঁধা অবস্থায় বসেছিল সারি সারি কঙ্কাল। এমনকি নিখোঁজ বিমানের ক্যাপ্টেন মিগেল ভিক্টর কারিও কঙ্কালরূপেই। চালকের আসনে বসে থাকা তার কঙ্কালের হাত তখনও ককপিটের কন্ট্রোল বাটনে।
এই বিবরণ ১৯৮৯ সালে প্রকাশিত হয়েছিল এক স্থানীয় সংবাদপত্রে। সাপ্তাহিক কাগজটির নাম উইকলি ওয়ার্ল্ড নিউজ। তার প্রথম পাতায় গোটা গোটা অক্ষরে শিরোনাম বেরিয়েছি ‘৯২ টি কঙ্কাল নিয়ে অবতরণ করল পঞ্চাশের দশকের বিমান’।