জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে মধ্য এশিয়ার দেশ কাজাখস্তানে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভ ও দাঙ্গা দমনে নিরাপত্তা বাহিনীকে কোনো প্রকার ‘সতর্কতা ছাড়াই’ গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রয়টার্স ও আল-জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, পাঁচ দিন ধরে দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া এই বিক্ষোভ কঠোর হাতে দমন করতে দেশটির প্রেসিডেন্ট কাসিম-জোমার্ট তোকায়েভ এই নির্দেশনা দিয়েছেন।
শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক টেলিভিশন ভাষণে কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্ট বলেন, দেশের শৃঙ্খলা ফেরাতে ‘সন্ত্রাসবিরোধী’ অভিযান চলবে। এ সময় বিক্ষোভকারীদের কঠোর হাতে দমন করা হবে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বল হয়, দেশজুরে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভ ও দাঙ্গায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৪৪ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৮ জন পুলিশ ও ২৬ জন বিক্ষোভকারী। আর আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৭০০ জন। এ ঘটনায় ৩০০ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে নিহত বিক্ষোভকারীদের ‘সশস্ত্র সন্ত্রাসী’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার সকালে কাজাখস্তানের বৃহত্তম শহর আলমাতির কেন্দ্রীয় স্কোয়ারের কাছে গুলির শব্দ শোনা যায়, যেখানে আগের দিনের বেশিরভাগ সময় সৈন্য ও বিক্ষোভকারীরা লড়াই করেছিলেন।
তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে অন্তত ৫ দিন ধরে চলা এই বিক্ষোভ এখন সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ নিয়েছে।
ইরানের সংবাদমাধ্যম পার্স টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়, কাজাখস্তানে আকস্মিকভাবে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে জনগণ বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে এবং সরকার পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়। তবে সরকারের পদত্যাগের পরও বিক্ষোভকারীরা দাঙ্গা অব্যাহত রেখেছে।
দাঙ্গা থামানোর জন্য কাজাখস্তানের সবচেয়ে বড় শহর আলমাতিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও দাঙ্গাকারীরা শহরে মেয়রের কার্যালয়ে আগুন লাগিয়ে দেয় এবং অন্য দপ্তরে হামলা চালায়।
এই বিক্ষোভের পেছনে বিদেশিদের মদদ থাকতে পারে বলে স্থানীয় ও আঞ্চলিকভাবে অনেকেই মনে করছেন। তারা বলছেন, বিভিন্ন ইঙ্গিত থেকে বোঝা যাচ্ছে যে, এই বিক্ষোভ নিছক জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির বিরুদ্ধে নয়, এর পেছনে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে।
এই বিক্ষোভ থামাকে কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্ট কাসিম-জোমার্ট তোকায়েভের অনুরোধে বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) ‘শান্তি রক্ষা বাহিনী’ পাঠিয়েছে রাশিয়া।