রাজধানীতে পৃথক ঘটনায় সবুজবাগ ও কামরাঙ্গীরচরে শিক্ষার্থীসহ তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মৃতদেহ তিনটি ময়নাতদন্তের জন্য শনিবার (৮ জানুয়ারি) রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নিহতরা হলেন- সবুজবাগের শিক্ষার্থী শফিকুল ইসলাম (১৮), কামরাঙ্গীরচরের রহিদুল ইসলাম হৃদয় (২২) ও রাসেল হোসেন (২৫)।
শফিকুলের মামাতো ভাই মো. লালন আহমেদ জানান, শফিকুলের বাড়ি বরিশাল সদর উপজেলার চাঁদপুরা গ্রামে। বাবার নাম মাজহারুল ইসলাম। তার ভগ্নিপতি সিদ্দিকুর রহমান পায়েলের সঙ্গে সবুজবাগ বাগপাড়া পশ্চিম রাজারবাগ ৮/ই/৬ নম্বর বাসায় থাকত। মিরপুর বাঙলা কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিল সে।
সবুজবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) বিমল চন্দ্র পাইন জানান, শনিবার রাত ১২টার দিকে খবর পেয়ে পশ্চিম রাজারবাগের ওই বাসার দরজা ভেঙে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। রুমের ভেতর ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল মৃতদেহটি।
তিনি জানান, মানসিকভাবে হতাশাগ্রস্ত হওয়ার কারণে সে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। বিস্তারিত তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এদিকে কামরাঙ্গীরচর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মনিরুজ্জামান জানান, শনিবার রাত দেড়টার দিকে কামরাঙ্গীরচর পশ্চিম ইব্রাহিমনগর বালুর মাঠ এলাকায় আব্বাস শেখের বাড়ির দ্বিতীয় তলার দরজা ভেঙে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচানো অবস্থায় হৃদয়ের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। রুমটিতে তিনজন মিলে থাকত। তবে ঘটনার সময় বাকি দুজন বাসার বাইরে ছিল বলে জানা গেছে। তিনি জানান, রাত আনুমানিক ১১টার দিকে তার ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছিল যেখানে লেখা, ‘আসসালামুআলাইকুম, বিদায় ফেসবুক ফ্রেন্ড’। এই পোস্ট দেখে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, প্রেমঘটিত কারণ বা পূর্বপরিকল্পিতভাবে সে গলা ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
তার বড় ভাই মো. সাগর জানান, তাদের বাড়ি মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি উপজেলায়। তার বাবা মৃত মৌলভী কায়সার। কামরাঙ্গীরচরে একটি ছবি বাঁধাই কারখানার কাজ করতো হৃদয়। গত রাত দেড়টার দিকে তার রুমমেট এর মাধ্যমে খবর পান গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে সে। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে তার রুমের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ দেখতে পান। তিন ভাই ও তিন বোনের মধ্যে সবার ছোট ছিলো সে।
অপর ঘটনায় নিহত রাসেলের ভগ্নিপতি রিয়াজ জানান, তার বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলায়। রাজমিস্ত্রির সহযোগী হিসেবে কাজ করত রাসেল।
কামরাঙ্গীরচর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. রনি চৌধুরী জানান, শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে ঝাউচর লবণ ফ্যাক্টরি গলির একটি বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় রাসেলের মৃতদেহ। স্বজনদের বরাত দিয়ে তিনি জানান, গত এক মাস আগে রুমি নামের এক নারীকে বিয়ে করে সে। এর মধ্যেই তাদের মাঝে পারিবারিক কলহ সৃষ্টি হয়। এর জের ধরে রাসেল গতকাল দুপুরে খাটের খুঁটির সঙ্গে গামছা পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়েছে বলে জানা গেছে।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় রাসেলের বোন জামাই রিয়াজ বাদী হয়ে আত্মহত্যার প্ররোচনায় মামলা করেছেন। মামলায় তার স্ত্রীর রুমী এবং রুমীর পূর্বপরিচিত কাইয়ুম নামের একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের আজকে আদালতে পাঠানো হবে। কাউয়ুমের সঙ্গে রুমীর অবৈধ সম্পর্ক ছিল বলে অভিযোগ করা হয়েছে।