ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র- টিএসসিতে একদল শিক্ষার্থীর আয়োজিত কাওয়ালী গানের আসরে হামলা করে মঞ্চ ও চেয়ার ভাঙচুর এবং আয়োজক ও শিল্পীদের মারধর করেছে আরেক দল শিক্ষার্থী।
বুধবার (১২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসি’র সঞ্জীব চত্বরে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো কাওয়ালী গানের ওই আসর। সে অনুযায়ী প্রস্তুতিও চলছিলো। অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার আগে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হামলা চালিয়ে অনুষ্ঠান বানচাল করে দিয়েছে বলে দাবি আয়োজকদের।
হামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন ও অর্থনীতি বিভাগের দুই নারী শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ অন্তত ১১ জন আহত হয়।
এই ঘটনার সংগে ছাত্রলীগের কোনও সংশ্লিষ্টতা নেই বলে দাবি করেছেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন।
ছাত্রলীগ বলেছে, শরিয়াহ ও তরিকা অনুযায়ী কাওয়ালি সহি কি না, নারীরা আসতে পারবেন কি না – এধরনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আয়োজকদের মধ্যে বিভেদ ছিলো। তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে টিএসসিতে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে টিএসসি’র সামনে তৈরি মঞ্চে পূর্বঘোষিত কাওয়ালি গানের আসর শুরু হয়। সাড়ে ছয়টার দিকে টিএসসি ভবনের ওপর কাওয়ালির আয়োজকদের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন একদল শিক্ষার্থী। একপর্যায়ে তাঁরা অনুষ্ঠানে অংশনেওয়া ব্যক্তিদের মারধর শুরু করেন, পাশাপাশি ভাঙচুর করেন অনুষ্ঠানের মঞ্চ ও দর্শকদের বসার চেয়ার। এসময় কাওয়ালি শিল্পীদেরও মারধর করা হয়। হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হন।
আয়োজকরা অভিযোগ করে বলেন, সকালে যখন আমরা অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নেই, তখন আমাদের বলা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন সেখানে অনুষ্ঠান করতে নিষেধ করেছেন। তখন সাদ্দাম হোসেনকে ফোন দিলে প্রক্টরের সংগে কথাবলতে বলেন। এরপর হঠাৎই আমাদের মাইক হারিয়ে যায়। এছাড়া আমাদের নানাভাবে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। সন্ধ্যা সাতটার দিকে আমাদের অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হামলা করে। তারা আমাদের স্টেজ, চেয়ার ও সাউন্ডবক্স ভাঙচুর করে।
আয়োজকরা জানান, অনুষ্ঠান করার বিষয়ে মৌখিকভাবে অনুমতি নেওয়া হয়েছে।
বিষয়টির প্রতিবাদ জানিয়েছে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল করে বাম ছাত্র সংগঠনের নেতা ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা প্রতিবাদ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ শেষে প্রক্টর অফিসের সামনে জড়ো হন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর একেএম গোলাম রাব্বানী ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণ শেষে বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।