হালকা আঁধারী আলোয় মিষ্টি চেহারায় মৃদু হাসি, চোখে কেমন এক চাহনী এই এক ছবি পুরো বিশ্বকে কাঁপিয়ে তুলেহিল। যাকে বলা হয়েছিল মোনালিসার চিত্রকর্ম। পাঁচশ বছর আগে লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির আঁকা পোট্রেট মোনালিসা সম্ভবত বিশ্বের সবেচেয়ে আলোচিত চিত্রকর্ম।
ফ্রান্সের ল্যুভ মিউজিয়ামে এখনও প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ শুধু মোনালিসার রহস্যময় হাসি দেখতে আসেন। কয়েক শ বছর ধরে মানুষ কম-বেশি বিশ্বাস করে আসছে দ্য ভিঞ্চির মোনালিসা ফ্লোরেন্সের তৎকালীন একজন সিল্ক ব্যবসায়ীর স্ত্রী লিসা গেরারদিনির প্রোট্রেট।
মোনালিসা ছবির রহস্য গুলি সম্পর্কে এবার জানা যাক। ছবিটি দেখে অনেকেই বলেছেন এখানে হাস্যময়ী এক নারীকে দেখা যাচ্ছে আবার অনেকে তার দুঃখে ভরা মুখটি দেখতে পেয়েছেন। অনেকে এটাও বলেছেন ছবিটি এক এক দিক থেকে এক এক রকম দেখতে বলে মনে হয়, এর আসল কারণ কি তা কেউই জানেন না।
৫১ বছর বয়সে তিনি এটা তৈরি করা শুরু করেন এবং প্রায় ১৬ বছর ধরে এটি তৈরি করেন শুধুমাত্র ঠোঁট আঁকতে তার সময় লেগে যায় প্রায় ১২ বছর। তবুও তিনি এটি সম্পূর্ণ করতে পারেননি, গবেষকদের বারবার গবেষণার পরও জানা যায়নি এর কোন অংশের কাজ এখনো অসম্পূর্ণ।
মোনালিসার ছবিটি ফ্রান্সের ল্যুভ জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। তবে ছবিটি নষ্ট করার জন্য কয়েকবার আক্রমণ করার পর থেকে এটাকে রক্ষণাবেক্ষণে বিশেষ নজর দেয়া হয়। ফ্রান্সের একজন গবেষক গত দশ বছর ধরে গবেষণার পর বলছেন, প্রোট্রেটের রহস্যময়ী এই নারী অন্য কেউ ছিলেন।
আর এই তত্ত্ব নিয়ে শিল্পী মহলে শুরু হয়েছে তোলপাড়। দ্য ভিঞ্চি মোনা লিসার পোট্রেটটি নিয়ে কাজ করেছিলেন ১৫০৩ সাল থেকে ১৫১৭ সাল পর্যন্ত। শুরু করেছিলেন ইটালির ফ্লোরেন্সে, তারপর ফ্রান্সে।
কিন্তু সেই তত্ত্বকে চ্যালেঞ্জ করেছেন প্যারিসের একজন বিজ্ঞানী পাসকাল কোট। ২০০৪ সালে ল্যুভ কর্তৃপক্ষ তাকে বিভিন্ন অ্যাঙ্গেল থেকে এই পোট্রেটের ছবি তোলার সুযোগ করে দেয়। তারপর এত বছর ধরে বিশেষ আলো এবং লেন্সের প্রযুক্তি ব্যবহার করে গবেষণার পর এই বিজ্ঞানী বলছেন, পোট্রেটের নারী লিসা গেরারদিনি নন, অন্য কেউ। পাসকাল কোট বলছেন, তিনি দেখেছেন ক্যানভাসের মোনালিসার পেছনে তিনটি আলাদা আলাদা ইমেজ।
তৃতীয় যে ইমেজটি তিনি খুঁজে পাচ্ছেন সেটি অন্য এক নারীর মুখ, তার ঠোঁটে কোনো হাসি নেই। এই বিজ্ঞানী একরকম নিশ্চিত ক্যানভাসে খালি চোখে না দেখতে পাওয়া সেই মুখই লিসা গেরারদিনির। মোনালিসা নিয়ে বিজ্ঞানী পাসকাল কোটের সাড়া জাগানো এই তত্ত্ব নিয়ে ল্যুভ মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষ কোনা মন্তব্য করতে রাজি হননি।