পিরোজপুরের কদমতলা ইউনিয়নে যুবলীগকর্মী নাদিম খানকে কুপিয়ে হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এবং অবিলম্বে সকল আসামিদের গ্রেফতারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে সদর উপজেলা যুবলীগ। শনিবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুর ২টায় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি কে এম মোস্তাফিজুর রহমান বিপ্লব বলেন, সদর উপজেলার কদমতলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শিহাব বাহিনীর নেতৃত্বে যুবলীগের কর্মী নাদিম খানের হাতের কবজি কেটে বিচ্ছিন্ন করেছে কতিপয় সন্ত্রাসীরা। তিনি সদর উপজেলা যুবলীগের পক্ষ থেকে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান। পাশাপাশি অবিলম্বে এ ঘটনায় জড়িত সকল আসামিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। পুলিশ তেমন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকতে যুবলীগ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপরে নির্মম নির্যাতন হচ্ছে, হাতের কবজি কেটে নিয়ে যাচ্ছে, পা ভেঙ্গে ফেলছে, কুপিয়ে আহত করছে কিন্তু পুলিশ আসামি ধরছে না বরং সন্ত্রাসীদের শেল্টার দিচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে কদমতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হানিফ খান জানান, এ পর্যন্ত কদমতলা ইউনিয়নে ১০ থেকে ১২ টি মামলা হয়েছে এর মধ্যে অধিকাংশ মামলাতেই কদমতলা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান সিহাব হোসেন আসামি রয়েছে। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ১৫ থেকে ২০ জন গুরুতর আহত হয়েছে। মামলা হলেও আসামিদের বিচারের আওতায় আনছে না পুলিশ। কোনো এক অদৃশ্য শক্তির নিয়ন্ত্রণে থেকে পুলিশ এ কাজ করছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন মল্লিক স্বপন, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম সিকদার, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম মিরন, জেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক সাদউল্লাহ লিটন, জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আক্তারুজ্জামান মানিক, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইরতিজা হাসান রাজু, কদমতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হানিফ খান।
বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) সকালে সদর উপজেলার কদমতলা ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে যুবলীগকর্মী নাদিম খানকে কুপিয়ে হাতের কবজি কেটে ফেলে প্রতিপক্ষরা। আহত অবস্থায় নাদিমকে উদ্ধার করে পিরোজপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে স্থানীয়রা। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় নাদিমকে প্রথমে খুলনা এবং পরে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। আহত যুবলীগকর্মী নাদিম খান সদর উপজেলার তেজদাসকাঠী এলাকার নজরুল ইসলাম খানের ছেলে।
এ ঘটনার বিষয়ে কদমতলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিহাব হোসেনের মোবাইল ফেনে বারবার কল করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) রাতে সদর থানায় বর্তমান কদমতলা ইউপি চেয়ারম্যান সিহাব হোসেন, তার ভাই ফারুক হোসেন, ভাইয়ের ছেলে সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বায়জিদ হোসেন সহ ৩২ জনকে নামিয় এবং ২০/২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে একটি মামলা দায়ের করে আহত নাদিমের ফুফু তামান্না। শুক্রবার রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে মিজান হাওলাদার নামে একজন আসামিকে গ্রেফতার করে।
পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আ. জ. মো. মাসুদুজ্জামান মিলু অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, এ ঘটনায় সদর থানায় একটি মামলা হয়েছে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে মিজান নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশের চারটি টিম বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।