ভোট দিতে গিয়ে মিলছে না আঙুলের ছাপ। তারপর আনসার সদস্যের পরামর্শে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে আবার আসেন, তাও মিলল না ছাপ। সবশেষ ভোটগ্রহণের দায়িত্বে থাকা কর্মীরা আঙুলে জেল মেখে দেন। তাতেও কোনো লাভ হলো না। তারপর কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর আবার চেষ্টা করেও মিলল না আঙুলের ছাপ। অবশেষে ভোট না দিয়েই হতাশ হয়ে ফিরতে হলো বাড়িতে।
রোববার (১৬ জানুয়ারি) নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে শহরের আদর্শ স্কুল নারী কেন্দ্রে এমনই এক ঘটনা ঘটল এক নারী ভোটারের সঙ্গে।
ওই ভোটারের নাম মনোয়ারা বেগম। তিনি বেলা সোয়া ১১টার দিকে কেন্দ্রে আসেন। ১৫ মিনিট লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে যখন আঙুলের ছাপ দিতে গেলেন, তখন মিলছিল না। সব আঙুল দিয়ে কয়েকবার চেষ্টা করেও ভোট দিতে পারেননি তিনি। একপর্যায়ে ভোট গ্রহণের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা তাকে বলেন, ‘আপনি একটু পরে আসেন।’
ঘটনাস্থলে থাকা আনসার সদস্য নূর জাহানের পরামর্শে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে আসেন মনোয়ারা। আবার সব আঙুল দিয়ে চেষ্টা করেন। এই দফাতেও ভোট দিতে পারেননি তিনি। এরপর ভোট গ্রহণের দায়িত্বে থাকা কর্মীরা মনোয়ারার আঙুলে জেল মেখে দেন। তাতেও কোনো লাভ হয়নি।
এ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা অন্যরা কিছুটা বিরক্ত হলে বুথের ভেতর পাশে এক জায়গায় দাঁড় করিয়ে মনোয়ারাকে অপেক্ষা করতে বলেন কেন্দ্রের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা। কিছুক্ষণ পর আবারও চেষ্টা করলেন মনোয়ারা বেগম। ইভিএমের সঙ্গে তার আঙুলের ছাপ আর মেলেনি। হতাশ হয়ে দুপুর ১২টার দিকে ভোট না দিয়েই বেরিয়ে যান মনোয়ারা।
ভোট দিতে না পারা মনোয়ারা বলেন, ‘কাজ করলে তো হাতের রেখা কিছুটা মুছে যায়। এখন আমার কী করার আছে? কষ্ট করে এসে ভোট দিতে পারলাম না।’
ওই কেন্দ্রে দেখা যায়, ‘সবাই সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে আসুন। নইলে আঙুলের ছাপ মিলবে না। দুই ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে’—ভোটারদের এমন কথা বলছিলেন আনসার সদস্য নূর জাহান। এমন কথা কেন বলছেন—খোঁজ নিতেই জানা গেল, বুথে অনেক ভোটারের আঙুলের ছাপ মিলছে না। তাই এ ব্যবস্থা!
সকালে নগরীর বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, নির্ধারিত সময়ে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। শীতের কুয়াশা উপেক্ষা করে ভোটাররা নিজ নিজ কেন্দ্রে গিয়ে উপস্থিত হন৷ কোনো ঝামেলা ছাড়াই ভোট দিতে পেরেছেন বলে জানান বেশ কয়েকজন ভোটার।
সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৪৮ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে লড়ছেন ৩৪ জন। কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, ইসলামী আন্দোলন, বাসদ, গণসংহতি আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশগ্রহণ করেছেন। মোট ১৮৯ জন প্রার্থীর মধ্য থেকে একজন মেয়র, ৯ জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর এবং ২৭টি ওয়ার্ডের জন্য একজন করে সাধারণ কাউন্সিলর বেছে নেবেন ভোটাররা।