কুষ্টিয়ার সরকারি কলেজের পিছনের রঞ্জুর পুকুরের উপর জালে আটকে পড়া একটি জীবন্ত শালিক ও বকসহ কিছু মৃত পাখি উদ্ধার করেছে বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফেডারেশন (বিবিসিএফ) কুষ্টিয়া টিম।
বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) বিকেলে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের পিছনের পুকুর থেকে পাখিগুলোকে উদ্ধার করা হয়।
বিবিসিএফ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার পুকুরের জালে আটকে থাকা কয়েকটি পাখিকে দেখতে পেয়ে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষক মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিবিসিএফকে খবর দেন কলেজের পেছনে স্থানীয় রঞ্জুর পুকুরে মাছ সংরক্ষণের জালে একটা জীবন্ত শালিক ও একটি বক আটকে আছে।
এমন খবরের ভিত্তিতে বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফেডারেশন (বিবিসিএফ) কুষ্টিয়া জেলার সভাপতি দি ফক্স ম্যান শাহাবউদ্দিন মিলন, সাধারণ সম্পাদক পাখি গবেষক এস আই সোহেল ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাংবাদিক নাব্বির আল নাফিজ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পাখিগুলোকে উদ্ধার করেন এবং গোটা পুকুরের সব জাল ছিঁড়ে পুড়িয়ে ফেলা হয়।
এ সময় পাখি গবেষক এস আই সোহেল বলেন, সরকার জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে আইনের ব্যবস্থা করেছে। সাধুবাদ জানাই সরকারের এমন মহৎ উদ্দেশ্যকে।
তিনি আরও বলেন, বড় বড় অট্টালিকা, যান্ত্রিকতা, বৃক্ষ নিধনসহ বিভিন্ন অনৈতিক কাজ করে আমরা দিন দিন প্রকৃতিকে করছি প্রাণশুন্য। দুনিয়ার প্রতিটি জীব কোনো না কোনো বিশেষ কাজের জন্য জন্মগ্রহণ করেছে। আমরা যদি ভবিষ্যত প্রজন্মকে সুন্দর এক আগামী উপহার দিতে চাই তাহলে প্রকৃতি, পরিবেশ ও পশু-পাখি রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে।
এ সময় সাংবাদিক কবি সঞ্জয় বিশ্বাস, বন বিভাগ কুষ্টিয়ার কর্মচারী জুয়েল, কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী রাকিব, তুষার, আব্দুল্লাহ, সৈনিক, সিয়াম, উচ্ছ্বাস, মিরাজ, আসিফ,নীলা, ফারজানা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা এবং তরুণ বন্যপ্রাণী গবেষক জোহরা মিলা জানান, বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ অনুযায়ী পাখি নিধনের সর্বোচ্চ শাস্তি এক বছর জেল, এক লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডও হতে পারে। একই অপরাধ ফের করলে শাস্তি ও জরিমানা দ্বিগুণের বিধানও রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এছাড়া কোনো ব্যক্তি অতিথি পাখির মাংস ও দেহের অংশ সংগ্রহ বা দখলে রাখলে অথবা বেচা-কেনা করলে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড ও সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রয়েছে।