চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে গৃহবধূকে দলবেঁধে ধর্ষণের পর খুনের দায়ে একজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই রায়ে দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। এছাড়া মারা যাওয়ায় অপর দুই আসামিকে মামলার বিচার কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪-এর বিচারক মোহাম্মদ জামিউল হায়দার এ রায় দেন।
ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট নিখিল কুমার নাথ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত মো. জসীম উদ্দিন বাপ্পী সীতাকুণ্ড উপজেলার কুমিরা এলাকার মৃত ইদ্রিস মিয়ার ছেলে। একই এলাকার বাসিন্দা আইয়ূব খান ও শরীফ আহম্মদ খালাস পেয়েছেন। এদের মধ্যে আইয়ূব খান ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছেন। হাজতে থাকা জসীম ও শরীফকে রায় ঘোষণার সময় আদালতে হাজির করা হয়েছিল।
মামলার অপর দুই আসামি সরওয়ার আলম সেরু ও আব্দুল মোতালেব লিটন জেলে থাকা অবস্থায় মারা গেছেন।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২৯ মার্চ চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার কুমিরা এলাকায় বাসার পাশের পাহাড়ে রান্নার জন্য কাঠ কাটতে যান শারমিন আক্তার নামের এক নারী। তিনি বাসায় ফিরে না আসায় অনেক খোঁজাখুঁজি করা হয়। ওই দিন রাতে পাহাড়ের পাশে তার ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ পাওয়া যায়। সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসে, শারমিনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে।
এ ঘটনায় নিহতের মেয়ে বাদী হয়ে মামলা করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত বৃহস্পতিবার এই রায় দেন।
তবে খালাস পাওয়া আসামিদের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের আপিল করা হবে বলে জানিয়েছেন পিপি নিখিল কুমার নাথ।
রায় ঘোষণার সময় খুনের শিকার শারমিনের মেয়ে ইয়াসমিন উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, আমার মা দিনে এনে দিনে খেত। পাহাড়ে বাগানে কাজ করত। লাকড়ি খুঁজে এনে বিক্রি করত। পাহাড়ে গেলে খেতে পারতো, না গেলে পারতো না। তারা আমার মাকে অসহায় পেয়ে এমন নির্যাতন করে খুন করেছে, মেয়ে হিসেবে আমি সেটা বলতে পারছি না। যারা খালাস পেয়েছে শরীফ ও আইয়ূব, এরাই মূল খুনি। মানুষ মারতে মারতে এদের এত সাহস হয়েছে যে, আমার মাকে নির্মমভাবে তারা খুন করেছে। এদের কাছ থেকে সাহস পেয়েছে বলেই জসীম আমার মাকে নির্যাতন করে খুন করেছে। এদের খালাস দেওয়ার রায় আমি মানি না, আমি উচ্চ আদালতে যাব।