প্রয়োজনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কিছুটা সংশোধন হতে পারে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ডিসি সম্মেলনে যোগদান শেষে একথা জানান তিনি।
এসময় তিনি বলেন, বাকস্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করার জন্য নয়; সাইবার ক্রাইমকে প্রতিরোধ করার জন্য এই আইন।
আনিসুল হক বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট নিয়ে জাতিসংঘের হিউম্যান রাইটস অফিসের সঙ্গে দুবার আলোচনা করেছি। সেই অফিসকে অবহিত করা হয়েছে আমরা আলোচনার জন্য প্রস্তুত। তারা যেন শিগগির আমাদের তারিখ দেয়, সেই তারিখ অনুযায়ী আমরা আলোচনায় বসতে রাজি আছি। লেজিসলেটিভ বিভাগের সচিবের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে।
এই কমিটির কাজ কী হবে- জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, এই আইন প্রধানত সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য করা হয়েছে। বাকস্বাধীনতা বা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করার জন্য করা হয়নি। সেটা যদি করা হতো এটা আইন হিসেবেই গণ্য হতো না। কারণ সংবিধানে মৌলিক অধিকার হিসেবে বাকস্বাধীনতা এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে রাখা হয়েছে। আমরা একটু আগে এই আইন করেছি, অনেক দেশেই করা হয়েছে এবং অনেক দেশ এই আইন করা আবশ্যক মনে করছে।
তিনি আরো বলেন, এই আইন যখন বাস্তবায়ন করা হয় সেখানে কিছু মিসইউজ ও কিছু অ্যাবিউস হয়েছে। এগুলো যাতে না হয়, সারা পৃথিবীর যে বেস্ট প্র্যাকটিসেস, জাতিসংঘের হিউম্যান রাইটস অফিসের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে বেস্ট প্র্যাকটিসগুলো নির্ণয় করে আমাদের দেশের জন্য কতটুকু প্রয়োজন সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে সেটা আমরা হয়তো বিধি দিয়ে গ্রহণ করবো। যদি প্রয়োজন হয় আইন কিছুটা সংশোধনও করা হবে।
ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা করার সঙ্গে সঙ্গে তা যেন মামলা হিসেবে গ্রহণ করা না হয়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে সেই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আমরা বলে দিয়েছি, আইসিটি অ্যাক্ট অনুযায়ী যেন সেলে পাঠানো হয়। সংবাদমাধ্যমের কর্মী যারা, যারা সাংবাদিক তাদের যেন ইমিডিয়েটলি অ্যারেস্ট না করা হয়, সেটার ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশনা দেয়ার পরে কিন্তু এই আইনে সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার করাটা অনেকাংশে কমে গেছে।
আইন ও বিচার বিভাগ, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ ও ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে জেলা প্রশাসকদের এ কার্য অধিবেশন হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এতে সভাপতিত্ব করেন।
অধিবেশনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তফা জব্বার ও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
এটকো পরিচালকদের মধ্যে এটিএন চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান, বাংলাভিশনের আব্দুল হক, দীপ্ত টিভির কাজী জাহিদুল হাসান, সময় টিভির আহমেদ যোবায়ের, ডিবিসি নিউজের এম মঞ্জুরুল ইসলাম, নাগরিক টিভির নাভিদুল হক এবং মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো: মিজান-উল-আলম ও খাদিজা বেগম প্রমুখ সভায় অংশ নেন।