রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজারে মাদক কারবার নিয়ে দ্বন্দ্বে যুবক খুনের জেরে বেরিয়ে আসছে এলাকায় কিশোর গ্যাং, মাদক ব্যবসা, ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্যের তথ্য। তাদের কাছে এক প্রকার জিম্মি ওই এলাকার বাসিন্দারা। হত্যায় জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার দাবি স্বজন ও এলাকাবাসীর।
রায়ের বাজার এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য, মাদক, ছিনতাই যেন নিয়মিত ঘটনা। পুরো এলাকা অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী আর মাদক ব্যবসায়ীদের যেন অভয়ারণ্য।
রায়ের বাজারের, ইদ্রিস রোড, আজিজ খান রোড, ক্যান্সার গলিতে মাদক নিয়ে দ্বন্দ্বে প্রায়ই সাধারণ মানুষ আহতের ঘটনা ঘটে। যেখানে বিভিন্ন দোকান বাসা বাড়িতে সন্ত্রাসী গ্রুপের হামলার ক্ষত লেগে আছে এখনও। স্থানীয়দের অভিযোগ, মাদকের জন্য প্রায়ই ধারালো অস্ত্রের আঘাতের শিকার হন তারা।
স্থানীয়রা বলছেন, এখানে সব ধরনের মাদকই বিক্রি হচ্ছে। বাচ্চারাও নেশা করছে। সন্ধ্যায় একজন ভালো মানুষ হেঁটে গেলেও তাকে জিজ্ঞেস করা হয় হিরোইন নেবে না কি বাবা। হঠাৎই মারামারি শুরু হয়ে যায়। নিরীহ লোকদেরকেও মারা হয়। কারও মায়ের বুক খালি করে। টাকা-পয়সা নিয়ে যাওয়া হয়। সামনে যাকে পায়, তাকেই কোপায়। অনেকের দোকান লুটপাট হয়ে যায়। কেউ কিছু বলার সাহস পায় না।
শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) মধ্যরাতে চা বিক্রেতাকে এলোপাতাড়ি ছুরির আঘাতে হত্যা করা হয় সেখানে। নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, কবিরের স্ত্রী স্বপ্নার সঙ্গে মাদক বিক্রি নিয়ে পূর্বের দ্বন্দ্ব থাকায় বাসা থেকে ডেকে নিয়ে ফানাল, হুমায়ুন ও কবির মিলে হত্যা করে আমির হোসেনকে।
স্বজনরা বলছেন, আমির হোসেন চা বিক্রি করতেন, ফুল বিক্রি করতেন। একবার মাদক বিক্রেতাদেরকে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দেয় সে। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে অনেক মারামারি হয়েছে। ঘটনার দিন ৫ জন ছিল। ৩ জন মেরেছে। আর ২ জন সহযোগী ছিল। তারা একটা অটোরিকশা করে উপস্থিত হয়। পরে একজন ডেকে নিয়ে মেরেছে।
হত্যার ঘটনায় জড়িতদের ধরতে এরইমধ্যে কাজ শুরু করেছে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ। তবে আসামিদের গ্রেফতারের পরই হত্যার প্রকৃত ঘটনা জানানোর কথা জানায় পুলিশ।
ডিএমপি তেজগাওঁ বিভাগের উপকমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, কেউ বলে মাদক, কেউ বলে নারী ঘটিত কিছু বিষয় আছে। বিষয়টি যাই হোক না কেন, হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারে আমি যা যা নির্দেশনা দেওয়ার দিয়ে দিয়েছি।
এই ঘটনায় নিহতের স্বজনরা বাদী হয়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।