সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
রোববার (২৩ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে শিক্ষকদের নিয়ে আয়োজিত এক সভায় এ আহ্বান জানানো হয়।
সভায় চলমান সংকট নিরসনে চারদফা দাবি জানিয়েছে শিক্ষক সিমিতি। দাবির মধ্যে রয়েছে- শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর ওপর পুলিশের হামলার নিন্দা জানিয়ে সরকার কর্তৃক নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা। অনশনরত শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙানোর জন্য যা যা করা দরকার তা করা।
এক্ষেত্রে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছে শাবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি। তবে উপাচার্যের পদত্যাগের বিষয়টি সরকারের এখতিয়ারভুক্ত। এক্ষেত্রে অতিদ্রুত পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান ও শিক্ষার্থীদের প্রতি কোনো ধরনের সহিংসতায় সম্পৃক্ত না হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
এদিকে, সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আমরণ অনশনের ১০০ ঘণ্টা অতিবাহিত হয়েছে।
রোববার (২৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ১০০ ঘণ্টা অতিবাহিত হয়। এতে বেশ কিছু শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী সাতজনকে ক্যানোলার মাধ্যমে লিকুইড স্যালাইন ও ভিটামিন সাপ্লিমেন্টারি দেওয়া হচ্ছে।
অনশনকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা পানিসহ কোনো ধরনের তরল খাদ্য গ্রহণ করছেন না। যার ফলে অনেকেই নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছেন। তবে উপাচার্যের পদত্যাগ না করা পর্যন্ত কেউ অনশন ভাঙবেন না।
এদিকে রোববার (২৩ জানুয়ারি) বিকেলে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগ দাবিতে চলমান আমরণ অনশন কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন আরও চার শিক্ষার্থী। এ নিয়ে অনশনরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা দাঁড়াল ২৭ জনে।
অনশনকারীদের মধ্যে বর্তমানে ১৫ জন অসুস্থ হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাকি ১২ জন অনশনরত অবস্থায় উপাচার্য বাস ভবনের সামনে অবস্থান করছেন।
উপচার্যের পদত্যাগের দাবিতে গত বুধবার (১৯ জানুয়ারি) বিকেলে ৩টা থেকে ২৪ শিক্ষার্থী আমরণ অনশন শুরু করেন। এর মধ্যে অনশনকারী এক শিক্ষার্থীর পরিবারের সদস্য অসুস্থ হওয়ায় অনশন ভেঙে বাড়ি ফিরে গেছেন তিনি।
উপাচার্যের পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত তারা আমরণ অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
এদিকে, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা উপাচার্য ভবনের সামনে মানব-শেকল তৈরি করেছে। জানানো হয় পুলিশ ব্যতিত কাউকে উপাচার্যের বাসভবনে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।