গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সশরীরে আদালতে হাজির হতে হবে না। রোববার (২৩ জানুয়ারি) আসামিপক্ষের আবেদন আমলে নিয়ে ঢাকার স্পেশাল জজ আদালত-৩ এর বিচারক মুহাম্মদ আলী হোসেন এ আদেশ দেন।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে তার আইনজীবী জয়নাল আবেদিন মেসবাহ সশরীরে উপস্থিতি মওকুফ চেয়ে আবেদন করেছিলেন।
আবেদনপত্রে উল্লেখ করা হয়, সরকারের নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়া বর্তমানে কারাগারের বাইরে আছেন। তিনি অসুস্থ এবং চলাফেরার করার অবস্থায় নেই।
দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল আসামিপক্ষের বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত আগামী ১৩ মার্চ মামলার পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করেন।
২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর রাজধানীর তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়াসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে গ্যাটকো দুর্নীতি মামলাটি দায়ের করেন দুদকের উপ-পরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী। তদন্ত শেষে ২০০৮ সালের ১৩ মে দুদকের উপপরিচালক জহিরুল হুদা খালেদাসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
আট জন মারা যাওয়ায় এখন এ মামলায় আসামির সংখ্যা ১৭ জন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গ্যাটকোকে ঢাকার কমলাপুর আইসিডি ও চট্টগ্রাম বন্দরের কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের কাজ পাইয়ে দিয়ে রাষ্ট্রের ১৪ কোটি ৫৬ লাখ ৩৭ হাজার ৬১৬ টাকার ক্ষতি করেছেন।
আসামিদের মধ্যে সাবেক মন্ত্রী এম সাইফুর রহমান, এম শামছুল ইসলাম, এমকে আনোয়ার, আকবর হোসেন, আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া, প্রাক্তন জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেন ও খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রাহমান কোকো মারা গেছেন। আর একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান কমোডর জুলফিকার আলী, আকবর হোসেনের স্ত্রী জাহানারা আকবর, দুই ছেলে ইসমাইল হোসেন সায়মন ও একেএম মুসা কাজল, এহসান ইউসুফ, প্রাক্তন নৌ সচিব জুলফিকার হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রাক্তন সদস্য একে রশিদ উদ্দিন আহমেদ, গ্লোবাল এগ্রোট্রেড প্রাইভেট লি. (গ্যাটকো) এর পরিচালক শাহজাহান এম হাসিব ও সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
দুর্নীতির দুই মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ইতোমধ্যে ১০ ও সাত বছরের কারাদণ্ড হয়েছে।
দেশে কেরানাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর পরিবারের আবেদনে সরকার গত বছর ২৫ মার্চ ‘মানবিক বিবেচনায়‘ শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য সাজা স্থগিত করে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়। পরে তা আরও বাড়ানো হয়।