শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) প্রক্টরিয়াল বডির শিক্ষকরা উপাচার্যের জন্য খাবার নিয়ে তার বাসভবনে ঢোকার চেষ্টা করলে বাধা দিয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (২৪ জানুয়ারি) বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে প্রক্টরের সাথে ৯ জন সহকারী প্রক্টরসহ ১২-১৫ জন শিক্ষক উপাচার্যের জন্য খাবার নিয়ে তার বাসভবনে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এসময় শিক্ষার্থীদের বাধার মুখে তারা প্রবেশ করতে পারেনি।
উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে গত বুধবার (১৯ জানুয়ারি) বেলা ৩টা থেকে অনশন করছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের এই অনশনে ২৮ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন।
এতে গুরুতর অসুস্থ হয়ে ১৫ জন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। বাকি ১৩ জন অনশনরত অবস্থায় উপাচার্য বাসভবনের সামনে অবস্থান করছেন। সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত গণঅনশনে যোগ দিয়েছেন আরও ৫ জন শিক্ষার্থী।
এর আগে, রোববার (২৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন করে দেয় তারা। এ বিষয়ে আন্দোলনকারীরা বলেন, উপাচার্যের বাসভবনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া কোনো সহিংস ঘটনা নয়। গত ১২ দিন ধরে চলমান আন্দোলনে কোনো সহিংসতা ঘটনা হয়নি বলেও দাবি করেন তারা।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবি উপাচার্যের বাসভবনের বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন করলো শিক্ষার্থীরা
এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে প্রতীকী অনশন কর্মসূচি পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। এসময় শাবিপ্রবি উপাচার্যের অপসারণ চেয়ে রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর আব্দুল হামিদ বরাবর খোলা চিঠি দেয় প্রগতিশীল ছাত্র জোট।
প্রসঙ্গত, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তুলে গত ১৩ জানুয়ারি রাতে আন্দোলনে নামেন ওই হলের শিক্ষার্থীরা।
এসময় প্রভোস্ট কমিটির পদত্যাগ, হলের অব্যবস্থাপনা দূর করে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং দ্রুত ছাত্রীবান্ধব ও দায়িত্বশীল প্রভোস্ট নিয়োগ দেওয়ার তিন দাবি নিয়ে আন্দোলনে নামে তারা।
পরে রোববার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করলে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। এরপর ওইদিন বিকালে ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েনের প্রতিবাদ করলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেয় পুলিশ।
ধাওয়া-পাল্টার এক পর্যায়ে পুলিশ লাঠিপেটা করে, কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাসহ অন্তত অর্ধশত আহত হন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দিলেও তা উপেক্ষা করে উল্টো উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনের এক পর্যায়ে আর শিক্ষার্থীরা উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে অনশন শুরু করেন। সোমবার (২৪ জানুয়ারি) অনশনের ষষ্ঠদিন চললেও সংকট নিরসনে কোনো উদ্যোগ নেই শাবিপ্রবি কর্তৃপক্ষের।