শরীয়তপুরে পতিত জমি লিজ নিয়ে জঙ্গল পরিষ্কার করে কৃষি বিভাগের পরামর্শে গোল আলুর আবাদ করে ইতিমধ্যে সফল কৃষকের তালিকা নাম লিখেছেন নওপাড়া ইউনিয়নের কৃষক লিটন বেপারি। তার সফলতা দেখে স্থানীয় অন্য কৃষকরাও আগ্রহী হয়ে উঠছেন চাষাবাদে

।কৃষক লিটন বেপারি জানান, পদ্মা নদীর বিচ্ছিন্ন চাঞ্চল্য নওপাড়া ইউনিয়নের পদ্মার বুকে জেগে ওঠা এই চরটি দীর্ঘদিন ছিল অনাবাদি। নলখাগড়া কাশবন খাউল্লা জঙ্গলে পরিপূর্ণ এই চরে শিয়ালের বসবাস থাকায়, দিনের বেলায়ও ভয়ে প্রবেশ করত না কেউ। সরকারি সহায়তা দিয়ে নড়িয়া উপজেলা কৃষি বিভাগ নওপাড়া ইউনিয়নের কয়েকজন কৃষককে পরামর্শ দিয়ে চরটিকে আনেন আবাদের আওতায়। পরামর্শ মতো কৃষক লিটন বেপারী ৬০ একর জমি লিজ নিয়ে জঙ্গল পরিষ্কার করে শুরু করেন আলুর আবাদ। আর এতেই আসে তার জীবনে সফলতা। প্রথম বছরেই খরচ তুলে লাভের আশা করছেন তিনি।

অনাবাদি জমিকে আবাদি করার সুযোগে বেকারত্ব দূর হয়েছে অনেকের। জঙ্গল পরিষ্কার করে আবাদ করার কাজটি শুরু সময় যারাই লিটন বেপারীকে নিয়ে উপহাস বিদ্রুপ করেছেন, আজ তারাও উৎসাহী হচ্ছেন চরের এই পতিত জমিতে ফসল ফলাতে। স্থানীয় আগ্রহী কৃষকরা চাচ্ছেন সরকারি সহায়তা।

নাড়িয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রোকনুজ্জামান জানান, বিচ্ছিন্ন পরিত্যক্ত চরটিকে উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমেই আবাদি করা সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে অনাবাদী জমিটি আবাদের আওতায় এসেছে। এই চরে বছরে তিনটি ফসলের আবাদ করা যাবে। এতে খাদ্য উৎপাদন বাড়বে। সরকারের লক্ষ্য উদ্দেশ্য পূরণ হবে।

ফসলের মাঠে পরামর্শ দিতে এসে জেলার শস্য উৎপাদন ও প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মো. গোলাম রসুল বলেন, কৃষককে সকল প্রযুক্তিগত পরামর্শ সবসময় দেওয়া হচ্ছে। পতিত এসব জমি একবার পরিষ্কার করে নিলে প্রতি বছর আবাদ করা সম্ভব হবে। লিটন বেপারীর আবাদকৃত ৬০ একর জমিতে ৭০০ মেট্রিকটন আলু উৎপাদিত হবার আশাবাদ ব্যক্ত করেন শরীয়তপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর শস্য উৎপাদন ও প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মো. গোলাম রসূল।

শরীয়তপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ মো. আব্দুল সাত্তার বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনামা কাজ করছে কৃষি মন্ত্রণালয়। যাতে দেশে এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি না থাকে সেই লক্ষ্য পূরণেই কাজ করছে কৃষি বিভাগ। পদ্মা নদী দ্বারা বিচ্ছিন্ন নওপাড়া চরে হাজার হাজার হেক্টর জমি কাশবন দারা আবৃত্ত হয়ে অনাবাদি পড়ে আছে। অনাবাদী জমিকে আবাদের আওতায় আনলে কৃষক লাভবান হবে। সকল জমিন আবাদের আওতায় আনার জন্য আহ্বান জানান তিনি।

শরীয়তপুরের নড়িয়া, ভেদরগঞ্জ, জাজিরা ও গোসাইরহাট উপজেলার বিভিন্ন চরাঞ্চলে আবাদের আওতায় আনার উপযোগী চর রয়েছে প্রায় ৪ হাজার হেক্টর। যার মধ্যে কৃষি বিভাগ আবাদের আওতায় আনতে সফল হয়েছে নড়িয়া ও জাজিরা উপজেলার ৩০০ হেক্টর জমি। এসব জমিতে আলু, সরিষা, ধান, গমসহ সব ধরনের ফসলের আবাদ হচ্ছে।