নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার বিরুদ্ধে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগ সমর্থিত আট চেয়ারম্যান প্রার্থী।
বুধবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার আট ইউপিতে উপজেলা আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীরা এক সঙ্গে জেলা প্রশাসক ও নোয়াখালী পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এই লিখিত অভিযোগ জমা দেন।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জা আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তার অনুসারী জনবিচ্ছিন্ন প্রার্থীদের জোরপূর্বক কেন্দ্র দখল করে অবৈধভাবে নির্বাচিত করার লক্ষ্যে আটটি ইউনিয়নে হীনচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আব্দুল কাদের মির্জা ইতোমধ্যে তার সন্ত্রাসীদের দিয়ে এবং তিনি সশরীরে বিভিন্ন ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডে উপস্থিত হয়ে বিভিন্ন দলের নেতা-কর্মীসহ আমাদের কর্মী সমর্থক ও সাধারণ ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন। মোবাইল ফোনেও অনেককে হুমকি দিচ্ছেন। এতে করে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
অভিযোগে আরও বলা হয়, তিনি নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে পৌরসভার সরকারি গাড়িসহ তার সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের সঙ্গে করে গাড়ি বহর নিয়ে বিভিন্ন গণসংযোগে উপস্থিত হয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদানের মাধ্যমে নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন। ফলে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনের দাঙ্গা-হাঙ্গামাসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সংগঠিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমতাবস্থায় আব্দুল কাদের মির্জার এমন উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড বন্ধসহ তার গাড়িবহরে থাকা সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার পূর্বক একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন জানানো হয়।
লিখিত অভিযোগ দেওয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা হলেন- সিরাজপুর ইউপির প্রার্থী মাঈন উদ্দিন মামুন (আনারস), চরপার্বতী ইউপির চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহবুবুর রশীদ মঞ্জু (আনারস), ৩ নম্বর চরহাজারী ইউপির নুরুজ্জামান স্বপন, (অটোরিকশা), চরকাঁকড়া ইউপির হানিফ সবুজ(চশমা), চরফকিরা ইউপির প্রার্থী জায়দল হক কচি (আনারস), রামপুর ইউপির প্রার্থী সিরাজিস সালেকীন রিমন (আনারস), মুছাপুর ইউপির চেয়ারম্যান প্রার্থী নজরুল ইসলাম চৌধুরী শাহীন (মোটরসাইকেল) ও চর এলাহী ইউপির প্রার্থী আব্দুর রাজ্জাক (আনারস)।
মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী নজরুল ইসলাম চৌধুরী শাহীন বলেন, ‘আমি এ ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান। আমাকে উপজেলা আওয়ামী লীগ সমর্থন দেওয়ায় কাদের মির্জা তার জনবিচ্ছিন্ন অনুসারী এক আমেরিকা প্রবাসীকে প্রার্থী দিয়েছেন। তিনি সরকারি গাড়ি ও সহযোগী ব্যবহার করে ভোটারদের হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খান বলেন, ‘উপজেলা আওয়ামী লীগ সমর্থিত আটজন প্রার্থীর জয়ের সম্ভাবনা দেখে কাদের মির্জা তার অনুসারী প্রার্থীদের পক্ষে কেন্দ্র দখলের পাঁয়তারা করছেন। বিষয়টি আমাদের প্রার্থীরা একযোগে জেলা প্রশাসককে জানিয়েছেন।’
এ বিষয়ে জানতে বুধবার দুপুরে মেয়র কাদের মির্জাকে ফোন করা হয়। তার সহকারী পরিচয় দিয়ে একজন রিসিভ করেন। কোন বিষয়ে ফোন দেওয়া হয়েছে জানতে চেয়ে তিনি বলেন, ‘মেয়র এখন বিশ্রামে আছেন। পরে ফোন করেন।’
জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। তবে এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত (বিকেল ৫টা) কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগের বিষয়ে খবর নেওয়া হচ্ছে।