সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা দেওয়ায় সাবেক শিক্ষার্থীদের গ্রেফতারের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল।
বুধবার (২৬ জানুয়ারি) ভোরে শাবিপ্রবির সাবেক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল এবং তার সহধর্মিণী একই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. ইয়াছমিন হক অনশনরত শিক্ষার্থীদের দেখতে আসেন।
এ সময় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমি আবেগি মানুষ। চোখের জল আটকাতে পারি না। আমি বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী স্মারকে লিখে ১০ হাজার টাকা পেয়েছি। এটা এখন তোমাদের দিচ্ছি। এখন সিআইডি দেখি আমারে অ্যারেস্ট করে কিনা। আমারে অ্যারেস্ট করে নিয়ে যাক।
পুলিশের উদ্দেশে জাফর ইকবাল বলেন, ছাত্রদের গায়ে হাত তুলবেন না। অলরেডি হাত তুলে আপনারা অনেক বড় ক্ষতি করে ফেলেছেন। আর করবেন না। তাদের হয়রানি করবেন না।
শিক্ষার্থীদের সব অভিযোগ ও দাবি শোনার পর ড. জাফর ইকবাল বলেন, তোমরা আমাকে গণমাধ্যমের সামনে কথা দিয়েছ, এ অনশন ভাঙবে। তোমাদের জীবন অনেক মূল্যবান। একজন মানুষের জন্য তোমরা জীবন দিয়ে দেবে, এটা মানা যায় না। গ্রেফতার সাবেক পাঁচ শিক্ষার্থীর বিষয়ে কথা হয়েছে। যেহেতু মামলা করা হয়ে গেছে, তাদের তো আদালতে তোলা হবে। আশ্বাস পেয়েছি ছাত্রদের জামিন দেওয়া হবে।
শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙাতে ঢাকা থেকে বুধবার (২৬ জানুয়ারি) ভোর ৪টার দিকে ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল এবং তার সহধর্মিণী ড. ইয়াছমিন হক অনশনরতদের কাছে আসেন। তাদের সঙ্গে দু’ঘণ্টার বেশি সময় আলোচনার পর অনশন ভাঙতে রাজি হন শিক্ষার্থীরা।
গত ১৩ জানুয়ারি থেকে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট কমিটির পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু তার পদত্যাগ বা সমস্যা সমাধানের কোনো উদ্যোগ না নেওয়ার অভিযোগে রোববার (১৬ জানুয়ারি) বিকেলে তিন দফা দাবি আদায়ে উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি ভবনে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা।
পরে উপাচার্য পুলিশ ডেকে আনেন তাকে উদ্ধার করতে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই সময় পুলিশ লাঠিপেটা, সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। পুলিশ ৩০০ জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করে।
১৯ জানুয়ারি বিকেলে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে তার বাসভবনের সামনে আমরণ অনশন শুরু করে ২৩ জন শিক্ষার্থী। একই দাবিতে পরদিন ২০ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১২টার দিকে ক্যাম্পাসে মশাল মিছিল বের করেন কয়েকশ’ শিক্ষার্থী।