চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে কক্সবাজারের টেকনাফের দুটি পাহাড়ে অবস্থানরত ২৫ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা। যে কোনো মুহূর্তে এই পাহাড়ধসে ব্যাপক প্রাণহানির শঙ্কার কথা উঠে এসেছে পরিবেশ অধিদফতরের প্রতিবেদনে। সুপারিশ করা হয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার।
এরপরই সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে বৈঠক করে ক্যাম্প দুটিতে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের সরিয়ে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার।
কক্সবাজারের টেকনাফের ২১ ও ২২ নম্বর ক্যাম্প বন বিভাগের ২০০ একর পাহাড়ি এলাকাজুড়ে অবস্থিত। এসব ক্যাম্পের ব্লকে পাহাড় কেটে পাহাড়ি ঢালে তৈরি করা হয়েছে রোহিঙ্গাদের বসতি। একই সঙ্গে নলকূপ ও পাম্পের মাধ্যমে দৈনিক ৭ লাখ ৭৪ হাজার লিটার ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করা হয়। পয়ঃবর্জ্য পরিশোধনের জন্য নেই ব্যবস্থা। এতে পরিবেশ হুমকির মুখে পড়েছে।
এ অবস্থায় পরিবেশ অধিদফতর তাদের প্রতিবেদনে ইচ্ছামতো পাহাড় কাটায় আসন্ন বর্ষা মৌসুমে পাহাড় ধস ও প্রাণহানির শঙ্কা প্রকাশ করেছে। প্রতিবছরই রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে পাহাড়ধসে প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এ জন্য অপরিকল্পিত পাহাড় কাটা ও বন উজাড়কে দায়ী করছেন পরিবেশবাদীরা।
কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি দীপক শর্মা দীপু বলেন, কক্সবাজার-উখিয়ায় প্রায় ১০ হাজার একর বনভূমি ধ্বংস হয়ে গেছে। যার কারণে প্রতিবছর পাহাড়ধসে রোহিঙ্গাদের মৃত্যু হচ্ছে। এবার দুটি ক্যাম্পে অত্যন্ত ঝুঁকিতে রয়েছে কিছু পরিবার। তাদের বাঁচাতে বর্ষার আগেই সরিয়ে নেওয়া দরকার।
আর অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. সামছু-দ্দৌজা জানালেন, পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারি রোহিঙ্গাদের সরিয়ে নিতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, ‘এর আগেও পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় যারা ছিল তাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত পালাক্রমে প্রায় ৫০ হাজার রোহিঙ্গাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। পরিবেশ অধিদফতরের প্রতিবেদন এসেছে, আমরা সে অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে বৈঠক করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে ৩৩টি আশ্রয় শিবিরে গত বছর পাহাড়ধসে মারা যায় ৮ জন রোহিঙ্গা।