ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার পথে মারা যাওয়া সাত বাংলাদেশির মরদেহ দেশে আনার চেষ্টা চলছে। তাদের দাফন নিজ দেশেই হবে।
রোববার (৩০ জানুয়ারি) রোমে বাংলাদেশ দূতাবাসের বরাত দিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বার্তায় বলা হয়, মরদেহ দেশে পাঠানোর জন্য ইতালি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছি আমরা। আমরা ইতালি কর্তৃপক্ষকে জোরালোভাবে আহ্বান জানিয়েছি এবং তারা একমত হয়েছে। এর আগে কিছু গণমাধ্যমে সোমবার (৩১ জানুয়ারি) ইতালিতে তাদের দাফন হওয়ার কথা প্রকাশ পেয়েছিল।
লিবিয়া থেকে যাত্রা করে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়া নৌকাটি ২৫ জানুয়ারি ল্যাম্পেডুসা দ্বীপে পৌঁছানোর সময় অতিরিক্ত ঠান্ডায় অভিবাসনপ্রত্যাশী সাত বাংলাদেশির মৃত্যু হয়।
শনিবার (২৯ জানুয়ারি) এক বিজ্ঞপ্তিতে নিহতদের নাম পরিচয় প্রকাশ করেছে ইতালিতে বাংলাদেশ দূতাবাস। সেখানে দেখা যায়, মারা যাওয়া সাতজনের পাঁচজনই মাদারীপুর জেলার।
তারা হলেন- মাদারীপুর সদর উপজেলার পশ্চিম পিয়ারপুর গ্রামের ইমরান হোসেন, একই উপজেলার পিয়ারপুর গ্রামের জয় তালুকদার, ঘটকচর গ্রামের সাফায়েত, মোস্তফাপুর গ্রামের জহিরুল ও সদর উপজেলার বাপ্পী, সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার সাজ্জাদ এবং কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার সাইফুল।
দূতাবাস জানিয়েছে, গত ২৫ জানুয়ারি ওই ঘটনায় যারা প্রাণে বেঁচে গেছেন, তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন দূতাবাসের শ্রমকল্যাণ বিভাগের কাউন্সিলর এরফানুল হকসহ বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রতিনিধিরা। তাদের মাধ্যমেই জানা গেছে মৃতদের নাম-পরিচয়।
লিবিয়া থেকে সমুদ্র পথে ইতালির দূরত্ব প্রায় ৪২০ মাইল বা ৭৭৭ কিলোমিটার। ভয়ংকর এ জলপথ পাড়ি দিয়ে স্বপ্নের ইতালি পৌঁছাতে সমুদ্র পথে নৌকাডুবিতে ২০১৪ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ৮ বছরে প্রায় ২২ হাজার ৬০০ মানুষের প্রাণ গেছে। যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশিও রয়েছে। সবশেষ গত ২৫ জানুয়ারি আরও ৭ বাংলাদেশির মৃত্যু হলো।
২০২১ সালে লিবিয়া থেকে সমুদ্র পথে প্রায় ১ লাখ ৭ হাজার অভিবাসন প্রত্যাশী ইতালির উদ্দেশে যাত্রা করেন। সব বাধা অতিক্রম করে, প্রায় ৬০ হাজার অভিবাসী ইতালি পৌঁছাতে সক্ষম হয়, যার মধ্যে ৭ হাজার ৩০০ বাংলাদেশি। আর সাগরে ডুবে মৃত্যুবরণ করেন ১ হাজার ৪০০ জন। বাকিরা কোস্টগার্ড ও নিরাপত্তা বাহিনীর বাধার মুখে লিবিয়া ও তিউনিসিয়ায় ফিরত যেতে বাধ্য হন।