সম্প্রতি রাজধানীর মহাসড়কগুলোতে বেড়েছে ডাকাতির ঘটনা। কিন্তু এসব ঘটনায় মামলা না নেয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।
দ্রুত ডাকাতির মামলা নেয়ার নির্দেশ দিলো ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। সেই সাথে মহাসড়কে নিরাপত্তা বাড়ানোর পরামর্শ দিলেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
সাম্প্রতিক ঘটনায় জড়িত ডাকাত দলের সদস্যদের গ্রেফতার পর এমনটা জানালেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার হাফিজ আক্তার।
গেলো ২০ জানুয়ারি রাতে আব্দুল্লাহপুর থেকে ঢাকা-রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জগামী একটি বাসে ডাকাতের কবলে পড়েন ডাক্তার শফিকুল ইসলাম। চোখ বেঁধে রাতভর তাকে বেধড়ক পেটায় ডাকাতরা। গাড়ির সব যাত্রীর কাছ থেকে লুটে নেয় সর্বস্ব।
বাসে ওঠা মাত্রই ডাকাতরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দুই হাত ও চোখ বেঁধে বাসের পেছনে নিয়ে গিয়ে তাদের সঙ্গে থাকা নগদ এক লাখ ১৫ হাজার টাকা নিয়ে নেয়।
পরে মোবাইলের বিকাশে থাকা পাঁচ হাজার টাকা এবং ব্যাগে থাকা দুইটি ব্যাংকের এটিএম কার্ড ও পিন নিয়ে পরবর্তীতে আরও এক লাখ ৬০ হাজার তুলে নেয়।
সেই সঙ্গে মোবাইল ফোন ও অন্যান্য জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়। ডাকাতরা প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে ঢাকা মহানগর ও আশপাশ এলাকায় বাসে যাত্রী তুলে ডাকাতি করতে থাকে।
ঘটনায় জড়িত আন্তঃজেলা ডাকাত দলের মূলহোতাসহ এই চক্রের আট সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি। সোমবার সকালে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান এই চক্রটির সব সদস্যের বিরুদ্ধেই একাধিক মামলা আছে।
ডিবি’র অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, ডাকাত দলটি পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আর কে আর পরিবহনটিকে ভাড়ার কথা বলে সাভারের গেন্ডা এলাকায় নিয়ে যায়।
সেখান থেকে ডাকাতরা প্রথমে বাসের ড্রাইভার ও হেলপারকে জিম্মি করে বাসটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিজেরাই বাসটি চালিয়ে মহানগর এলাকার বিভিন্ন সড়ক দিয়ে ঘুরতে থাকে।
পথে বিভিন্ন স্থানে বেছে বেছে যাত্রী ওঠায়। পরে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে, হাত-মুখ বেঁধে তাদের সঙ্গে থাকা নগদ টাকা, মোবাইল ফোনসহ সর্বস্ব লুটে নিয়ে ভোরে নির্জন স্থানে নামিয়ে দেয়।
এই চক্রটি ঢাকা জেলার সাভার, টাঙ্গাইল ও গাজীপুরের বিভিন্ন স্থানে একইভাবে ডাকাতি করে। তাদের নামে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
তবে অভিযোগ আছে গনপরিবহনে ডাকাতির ঘটনায় মামলা করতে গেলে পুলিশের হয়রানির মুখে পড়েন ভুক্তভুগিরা। মামলা নিতে চায়না পুলিশ।
এ ক্ষেত্রে পুলিশের দায়িত্বে কোন ধরনের অবহেলা আছে কিনা, সেটি খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা।
এদিকে মিরপুরের বেড়িবাঁধ এলাকায় গোয়েন্দা পুলিশের পরিচয়ে ডাকাতির প্রস্তুতি কালে আরও আট ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।