রাশিয়া আগ্রাসন চালালে ইউক্রেনে যুদ্ধের জন্য সেনা পাঠানোর কোনো পরিকল্পনা নেই বলে সাফ জানিয়েছে ন্যাটো
ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়ার সেনা উপস্থিতিতে হামলার আশঙ্কার মধ্যেই, ইউরোপের জ্বালানি নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে পশ্চিমা জোটটি। এদিকে, রাশিয়ার নিরাপত্তা নিশ্চয়তায় গুরুত্বপূর্ণ দাবিগুলো নিয়ে ন্যাটোর অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইবে মস্কো। রোববার রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ একথা জানিয়েছেন।
ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্রসহ ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে চলমান উত্তেজনার পারদ দিন দিন বেড়েই চলেছে। উত্তেজনার মধ্যেই রাশিয়া ইউক্রেনে আগ্রাসন চালালে সেখানে যুদ্ধের জন্য সেনা পাঠানোর কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছে পশ্চিমাদের সামরিক জোট ন্যাটো। রোববার (৩০ জানুয়ারি) বিবিসিতে এক সাক্ষাতকারে এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে ন্যাটোর মহাসচিব স্টলটেনবার্গ এ কথা বলেন। এসময় জোটের পক্ষ থেকে সহযোগিতা প্রদানের বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
ইয়েন্স স্টলটেনবার্গ বলেন, ইউক্রেনে ন্যাটো সেনা মোতায়েনের কোনো পরিকল্পনা আমাদের নেই। তাদের সমর্থন দেওয়ার দিকেই আমাদের মনোযোগ। ইউক্রেনে ন্যাটো মিত্রদের প্রশিক্ষক রয়েছে। আমরা তাদের সক্ষমতা তৈরিতে সাহায্য করছি। সাইবার প্রতিরক্ষাসহ তাদের প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে আধুনিকীকরণ করতে পারি।
রাশিয়া ইউক্রেনে অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে দাবি করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা মিত্র দেশগুলো। তবে রাশিয়া বরাবরই তা অস্বীকার করে আসছে। রোববারের ওই সাক্ষাতকারে জোটের মহাসচিব ইউরোপের জ্বালানি পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। কারণ প্রাকৃতিক গ্যাসের জন্য রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এক-তৃতীয়াংশ গ্যাস আসে রাশিয়া থেকে।
ইয়েন্স স্টলটেনবার্গ বলেন, আমরা ইউরোপের জ্বালানি পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। কারণ প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহকারী একটি দেশের ওপর খুব বেশি নির্ভরশীল হওয়া দুর্বলতার লক্ষণ। তাই ন্যাটো মিত্ররা একমত হয়েছে ভিন্ন উপায়ে জ্বালানি তেল সংগ্রহে।
রাশিয়ার নিরাপত্তা নিশ্চয়তায় গুরুত্বপূর্ণ দাবিগুলো নিয়ে ন্যাটোর অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাওয়ার কথা জানিয়েছে মস্কো। রোববার রাশিয়ার দাবিগুলোর বিষয়ে ন্যাটো মিত্রদের সাড়া যথেষ্ট নয় বলে অভিযোগের পরই এমন কথা জানালেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ।
সের্গেই ল্যাভরভ বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আমরা জোটের সহকর্মী, ইউরোপীয় নিরাপত্তা ও সহযোগিতা সংস্থার কাছে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানাবো। এতে আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চয়তার দাবিতে তাদের প্রতিশ্রুতির বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। তারা যদি দাবি মানতে অস্বীকৃতি জানায় তাহলে তাদের ব্যাখ্যা দেওয়া উচিত।
এসময় পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে কেবল প্রতিশ্রুতিই নয়, আইনগত নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চাওয়া হবে বলেও জানান রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী।