গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে মারাত্মক সংক্রমাক ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে মারা গেছে একটি বাঘ এবং ১১টি জেব্রা। এই ১২টি পশুর শরীরেই পাওয়া গেছে ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাকটেরিয়া।
পার্কের ১১টি জেব্রার শরীরে চার ধরনের ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গেছে। বিভিন্ন পরীক্ষায় দেখা গেছে ক্লাসট্রিডিয়াম নামের ব্যাকটেরিয়াটি প্রাণীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
এই ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাকটেরিয়া মাটি থেকে জেব্রাগুলোকে আক্রান্ত করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেই সংক্রমণ থেকেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে আফ্রিকা অঞ্চলের এসব প্রাণী।
আর, তীব্র ও গুরুতর সংক্রামক রোগ এনথ্রাক্সে মারা গেছে সাফারি পার্কের বাঘটি। পার্কে এসব রোগের উপস্থিতি অন্য প্রাণীদের ঝুঁকিতে ফেলেছে।
বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে এক মাসে ১১টি জেব্রার মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা এখনও কাটেনি। মৃত জেব্রার শরীরে মিলেছে ই-কোলাই আর ক্লাসট্রিডিয়ামসহ চার ধরনের ব্যাকটেরিয়া।
আর অ্যানথ্রাক্সে রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে একটি বাঘ। ব্যাসিলাস অ্যান্থ্রাসিস নামক এক ধরনের ব্যাকটেরিয়ার কারণে হয়ে থাকে এই রোগ।
বাঘটির পায়ে ক্ষত হয়ে গিয়েছিল। পরে বাঘটির চিকিৎসাও দেয়া হয়। দিন দিন বাঘটি দুর্বল ও খাবার গ্রহণ না করতে করতে মারা যায়। ১২ জানুয়ারি সকালে বাঘটির মৃত পাওয়া যায়।
এসব জীবাণুর উপস্থিতি এই সাফারি পার্কের অন্য প্রাণীদেরও ঝুঁকিতে ফেলেছে। আধুনিক পরীক্ষাগার না থাকায় অন্য প্রাণীদের স্বাস্থ্য পরিস্থিতিও নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।
বন্যপ্রাণী পরিচর্যায় দক্ষ জনবলের ঘাটতিও প্রকট। আছে চিকিৎসক সংকট। দেশের আবহাওয়ার সাথে আফ্রিকান এই প্রাণীগুলো খাপ খাওয়াতে পারবে কিনা সেই সমীক্ষাও করা হয়নি।
সব মিলে এখন বেশ জরাজীর্ণ বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক। জেব্রার মৃত্যুর ঘটনায় প্রত্যাহার হওয়া সাফারি পার্কের তত্বাবধায়ক বলেন, সব তথ্যই তিনি তদন্ত কমিটির কাছে দিয়েছেন।
জেব্রাগুলোর মৃত্যুর পর বিশেষজ্ঞ দল প্রাণী সুরক্ষায় দশটি পরামর্শ দিলেও আলাদা করা হয়নি জেব্রাগুলোকে।
তদন্ত কমিটি আহবায়ক অতিরিক্ত সচিব সঞ্জয় কুমার ভৌমিক জানান, পার্কের প্রাণীগুলো রক্ষায় দ্রুত পুকুরের পানি শোধন, টিকা প্রদান ও তাদের কৃমিমুক্ত করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।