কক্সবাজারের দুর্গম পেকুয়ার পাহাড়ি অঞ্চলে দেশীয় অস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধান পেয়েছে র্যাব। টানা ৪৮ ঘণ্টার অভিযানে বিপুল অস্ত্র ও সরঞ্জামসহ আটক করা হয়েছে ৩ জনকে। অভিযোগ রয়েছে, অস্ত্র ব্যবসাসহ পাহাড়ি অঞ্চলে ত্রাস সৃষ্টি করে আসছিল হামিদ বাহিনী।
একেবারে পাহাড়ের চূড়ায় একটি ঘর। মেঝেতে পড়ে আছে অস্ত্র তৈরির নানা সরঞ্জাম। সঙ্গে রয়েছে তৈরি অস্ত্রও। দীর্ঘদিন এই পাহাড়টিকে অস্ত্র তৈরির কারখানা হিসেবে ব্যবহার করছিল হামিদ বাহিনী। সম্প্রতি ১৫ সহযোগীসহ আটক হওয়া জলদস্যু কবিরের কাছ থেকেই এই অস্ত্র কারখানার তথ্য মেলে। মঙ্গলবার সকাল থেকে শুরু সাঁড়াশি অভিযান শুরু করে র্যাব। আটক করা অস্ত্র তৈরির কারিগর আমিরুলসহ ৩ জনকে। উদ্ধার করা হয় ৮টি অস্ত্র।
র্যাব ৭-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ বলেন, এটি হামিদের বাসা। এই অস্ত্রগুলোর মূল কারিগর আমিরুল। আমিরুলকে আমরা ধরতে সক্ষম হয়েছি। সেই সঙ্গে আমরা হামিদুরের ছোট ভাইকেও ধরেছি। তবে হামিদকে আমরা ধরতে পারিনি। তবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
অভিযোগ রয়েছে, সাগরের বিভিন্ন জলদস্যু বাহিনী এবং মহাসড়ককেন্দ্রিক ডাকাত গ্রুপগুলোর কাছে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করা হতো প্রতিটি অস্ত্র।র্যাব ৭-এর স্কট কমান্ডার রায়হান উদ্দিন মুরাদ বলেন, অস্ত্রগুলো হাইওয়েতে ডাকাতি করার কাজে ব্যবহার করা হতো। এগুলো তারা বিক্রি করে। অনেক সময় ভাড়াও দিয়ে থাকে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন দিন পুরো এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল হামিদ বাহিনী। অস্ত্র তৈরির পাশাপাশি পাহাড়ি বনাঞ্চল উজাড় ও খুন-ধর্ষণের অভিযোগও রয়েছে এই বাহিনীর বিরুদ্ধে। স্থানীয়রা বলেন, হামিদ বাহিনীর অত্যাচারে মানুষ অতিষ্ঠ।
চট্টগ্রামের বাঁশখালী এবং কক্সবাজারে পেকুয়ার সীমান্তবর্তী এই পাহাড়ি অঞ্চলে পায়ে হেঁটে আসতে হয়। যে কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তেমন তৎপরতা ছিল না।
একসময় দেশীয় অস্ত্র কারখানা হিসেবে পরিচিত ছিল কক্সবাজারের মহেশখালি। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লাগাতার অভিযানের মুখে স্থান বদল করতে বাধ্য হয় অস্ত্র ব্যবসায়ীরা। এখন তারা বেছে নিয়েছে দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চল।