ব্রিটেনের সিংহাসনে বসা রানিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শাসন করেছেন দ্বিতীয় এলিজাবেথ। রানি এলিজাবেথের নাম শুনেছেন হয়তো সবাই। সিংহাসনের অধিকার পাওয়ার পর ৭০ বছর পার করতে চলেছেন তিনি। সবচেয়ে বেশি সময় ধরে আছেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। এর আগে কোনো ব্রিটিশ শাসকেরই টানা সাত দশক সিংহাসনে আসীন থাকার ইতিহাস নেই। রানির পর সিংহাসনের দাবিদারদের মধ্যে রয়েছেন তার ছেলে যুবরাজ চার্লস, নাতি যুবরাজ উইলিয়ামসহ আরও অনেকে।
রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের জন্ম ২১ এপ্রিল ১৯২৬ সালে। ব্রিটেনের হাজার বছরের ইতিহাসে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ হলেন দ্বিতীয় ব্যক্তি। তবে ব্রিটেনের শাসক কিন্তু দ্বিতীয় এলিজাবেথের হওয়ার কথা ছিল না। সিংহাসনের উত্তরাধিকারী হিসেবে তার অবস্থান ছিল চাচা অষ্টম এডওয়ার্ড এবং বাবা ষষ্ঠ জর্জের পরে। তবে বিপত্নীক নারী ওয়েলিস সিম্পসনকে বিয়ে করার কারণে ১৯৩৬ সালে সিংহাসন ত্যাগ করেন অষ্টম এডওয়ার্ড। অতঃপর তার স্থলাভিষিক্ত হন এলিজাবেথের বাবা ষষ্ঠ জর্জ। সে হিসেবে বলা যায়, ষষ্ঠ জর্জ ব্রিটেনের শেষ পুরুষ শাসক। ১৯৫২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি মাত্র ২৫ বছর বয়সে ব্রিটেনের সিংহাসন লাভ করেছিলেন তিনি।
ষোল বছর বয়সে তিনি প্রথম জনসম্মুখে আসেন। আঠার বছর বয়সে সামরিক বাহিনীতে প্রশিক্ষণের জন্য যোগদান করেন। ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ব্রিটিশ রাজা ষষ্ঠ জর্জ মৃত্যুর পর এলিজাবেথ সিংহাসনে বসেন। ১৯৪৭ সালের ২০ নভেম্বর যুবরাজ ফিলিপের সঙ্গে বিয়ে হয়। তবে ফিলিপের ১৯৪৭ সালের পহেলা এপ্রিল এলিজাবেথ ২১ বছরে পদার্পণের পর সেটি স্বীকৃতি পায়।এরপর একইসঙ্গে সংসার আর রাজ্যপাট চালাচ্ছেন তিনি। খাতা কলমে রাজ্যপাট থাকলেও ব্রিটেনের প্রশাসন পরিচালনা করে সে দেশের সরকার। জনতার ভোটের মাধ্যমে সেই সরকার বেছে নেয়।
বর্তমানে রানির বয়স ৯৫ বছর। সিংহাসনে বসার পর থেকে বহু পরিবর্তন ও বহু ইতিহাসের সাক্ষী থেকেছেন তিনি। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যকে আধুনিকায়নের পাশাপাশি দ্রুতগামী পৃথিবীর সঙ্গে টিকিয়ে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন তিনি। সিংহাসনে ৭০ বছর কেটে গেছে তার এখনো জনপ্রিয়তা এবং মানুষের কৌতূহলের বাইরে নন তিনি। প্রতিদিনই লাখ লাখ মানুষ তার সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে ইন্টারনেট ঘাঁটেন। ২০১২ সালে রানী এলিজাবেথ হীরক জয়ন্তী উদযাপন করেন। ব্রিটিশ রাজ পরিবারের মধ্যে তিনিই সবথেকে জনপ্রিয়।