অভাব মানুষকে যে কোন অপরাধের দিকে ঠেলে দিতে পারে। চুরি থেকে শুরু ডাকাডিসহ নানা ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িতে যেতে দেখা গেছে অভাবি মানুষকে।
তবে অভাবে পরে এবার জানা গেলো বিচিত্র এক অপরাধের কথা। বিভিন্ন ধরনের গ্যাংয়ের নাম শোনা গেলেও এর আগে কখনও বিয়ে গ্যাংয়ের নাম কখনো শোনা যায়নি।
ভারতে এমনই এক বিয়ে গ্যাং পরিচালনা করছেন ২৮ বছরের এক নারী। দেশটির মধ্যপ্রদেশের জবলপুরের ধনবন্তপুরের বাসিন্দা তিনি।
তার পেশাই হচ্ছে বিয়ে করে বরের সর্বস্ব কেড়ে নেয়া। অনেকটা ডাকাতির ঘরনা। আর এই কাজের জন্য তার ছিলো ছোটখাটো একটা বাহিনী।
মেয়েটির নাম ঊর্মিলা আহারিবার। ২০ বছর বয়সেই অজয় আহিরবারের সঙ্গে বিয়ে হয় তার। কিন্তু বিয়ের অল্প দিন পরেই অজয় মারা গেলে চোখে অন্ধকার দেখেন ঊর্মিলা।
বাবা বাড়িতে ফিরে সেলাইকর্ম করেই চলতো তার জীবন। এ সময় তার সঙ্গে পরিচয় হয় রাজস্থান থেকে আসা যুবক ভাগচন্দের সঙ্গে।
আর প্রতিবেশী অর্চনা বর্মণের মাধ্যমে ঊর্মিলার সঙ্গে শ্যাম নামের আরেক ব্যক্তির পরিচয় হয়। এই ব্যক্তির মাধ্যমে অমরসিংহ প্যাটেল নামে আরেকজনে সঙ্গে পরিচয় হয় ঊর্মিলার।
এই চার জনে একটি বিষয়ে খুব মিল ছিলো। তাদের সবার প্রয়োজন ছিলো টাকার। আর সেই উদ্দেশ্যেই তারা ঊর্মিলাকে কেন্দ্র করে গড়ে তোলেন একটি বিয়ে দল।
এই দলটি বেছে বেছে বের করতেন বেশি বয়সের পুরুষ, যাদের নানা কারণে বিয়ে হয়নি। এসব পুরুষের কাছে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যেতো দলটি। পাত্রী ঊর্মিলাই।
সব কিছু ঠিক হলে ঊর্মিলাকে পাত্রী সাজিয়ে, বাকি সদস্যরা ঊর্মিলার আত্মীয় সেজে পাত্রের বাড়িতে হাজির হতেন। তারপর বরের সব কিছু লুটে নিয়ে পালিয়ে যেতেন তারা।
ঊর্মিলার প্রথম শিকার ছিলেন রাজস্থানের এক ব্যক্তি। বিয়ের চার মাসের পর সুযোগ বুঝে নগদ ২০ হাজার টাকা এবং গয়না নিয়ে চম্পট দেন ঊর্মিলা।
এভাবে একে একে সাতটি বিয়ে করেন ঊর্মিলা। প্রতিবারেই সুযোগ বুঝে সময়মতো টাকা আর গয়না নিয়ে পালিয়ে যেতেন বরের বাড়ি থেকে।
কিন্তু চোরের দশ দিন তো গৃহস্থের একদিন। চলতি ফেব্রুয়ারির শুরুতে দশরথ প্যাটেল নামে এক ব্যক্তিকে বিয়ে করতে গিয়েই ফাঁদে পড়েন ঊর্মিলাসহ পুরো গ্যাং। যা ছিলো তার আট নম্বর বিয়ে।
বিয়ের পরপরই নগদ টাকা ও গয়না নিয়ে পালিয়ে যান ঊর্মিলা। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। প্রথমে ধরা পড়েন ঊর্মিলার প্রতিবেশী অর্চনা। এরপর একে একে ঊর্মিলাসহ সবাইকে ধরে পুলিশ।