একদিকে গ্যাস সঙ্কটে নির্ভরতা বেড়েছে জ্বালানি তেলের ওপর অন্যদিকে চড়া বিশ্ববাজার। গত কয়েকমাস ধরেই এমন দ্বিমুখী চাপে বিদ্যুৎ খাত। ফলে রেকর্ড গড়েছে ইউনিটপ্রতি উৎপাদন ব্যয়। পৌনে ছয় টাকা ইউনিটের বিদ্যুতে ক্যাপাসিটি চার্জ বা স্থির ব্যয় আড়াই টাকার বেশির। গত ৫ বছরে সেই অর্থের পরিমাণ ৮৭ হাজার কোটির বেশি।
পিডিবির হিসাবে, সবশেষ অর্থবছরে প্রতি ইউনিটে গড় ব্যয় ছিল সাড়ে ছয় টাকার নিচে। যা বর্তমানে ৮ টাকার ওপরে। তাই ৫ টাকা ১২ পয়সাহারে বিক্রি করায় প্রতি ইউনিটেই লোকসান যাচ্ছে প্রায় ৩ টাকা। এমন অবস্থা চলতে থাকলে, চলতি অর্থবছর শেষে সরকারকে ভর্তুকি দিতে হবে প্রায় ২৭ হাজার কোটি টাকা। যা কমিয়ে আনতেই প্রস্তুতি চলতি দাম বাড়ানোর।
পিডিবির হিসাবে, গত ডিসেম্বর পর্যন্ত সবশেষ সাড়ে পাঁচ বছরে ভর্তুকি গেছে প্রায় ৩৯ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু এর চেয়েও কম সময়ে অর্থাৎ পাঁচ বছরে কেন্দ্র ভাড়া বা ক্যাপাসিটি চার্জের পেছনে চলে গেছে ৮৭ হাজার কোটি টাকা। বিশ্লেষণ বলছে, এই সময়ে প্রতি ইউনিটের গড় ব্যয় ছিল ৫ টাকা ৭১ পয়সা। এর মধ্যে ক্যাপাসিটি চার্জ ছিল আড়াই টাকার ওপরে। ক্যাব মনে করে, এই অঙ্ক কমানো গেলে চাপ কমতো ভর্তুকির, প্রয়োজন হতো না দাম বাড়ানোর।
বর্তমানে প্রতি ঘনমিটার সাড়ে চার টাকায় গ্যাস কিনে উৎপাদন হয় বিদ্যুৎ। কিন্তু এই জ্বালানির দাম বাড়ানো হলে চাপ বাড়বে ভর্তুকির। কারণ, মোট উৎপাদনের অর্থেকের বেশিই গ্যাস নির্ভর।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দক্ষতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হলে লোকসানের অজুহাতে দাম বাড়ানোর পাঁয়তারার দরকার পড়তো না পিডিবির। যার খেসারত দিচ্ছেন জনগণ।