অভিবাসীদের আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগে ইতালির সিসিলিতে দুই বাংলাদেশিকে ২০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আফ্রিকার দেশ লিবিয়াতে ক্যাম্পে এই নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) পালেরেমোর কৌঁসুলি গেরি ফেরারা বলেন, কয়েকজন ভুক্তভোগীর অভিযোগ ছিল, বিবাদী পাজরুল সোহেল ও হারুন মোহাম্মদ তাদের মাসের পর মাস আটকে রেখে মারধর করেছেন। অভিবাসীদের ওপর অকথ্য নির্যাতন করেছেন এই দুই বাংলাদেশি।
এ মামলার তদন্তের সমন্বয় করেছেন কৌঁসুলি গেরি ফেরারা। ২০২০ সালের ২৮ মে পাজরুল ও হারুন ইতালি পাড়ি জমান। তখন তাদের সঙ্গে আরও অনেক অভিবাসী সিসিলিতে গিয়েছিলেন।
ভুক্তভোগীদের কয়েকজন তাদের ওপর নির্যাতনের দৃশ্য নিজেদের ফোনে ভিডিও করেছিলেন। পরে বিচারের সময় আদালতের সামনে প্রমাণ হিসেবে তা দেখিয়েছেন।
একে-৪৭ রাইফেল হাতে দণ্ডপ্রাপ্তদের ছবিও ফেসবুকে খুঁজে পেয়েছেন তদন্তকারীরা। অভিবাসীরা বলেন, তাদের আঘাত করতে ওইসব অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে।
এমন এক সময়ে এই সাজার রায় ঘোষণা করা হয়েছে, যখন লিবিয়িায় অভিবাসীদের আটকে রাখার নিন্দা জানিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস। তিনি এসব ঘটনাকে অমানবিক ও অগ্রহণযোগ্য হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
এর আগে গত জানুয়ারিতে লিবিয়া থেকে ভূমধ্যসাগরীয় দ্বীপ ল্যামপিডুজায় যাওয়ার পথে হাইপারথার্মিয়ায় আক্রান্ত হয়ে সাত বাংলাদেশি অভিবাসনপ্রত্যাশীর মৃত্যু হয়েছে। হাইপারথার্মিয়া বলতে মানুষের শরীরে তাপমাত্রা কমে যাওয়াকে বোঝায়। দীর্ঘ সময় ঠান্ডার মধ্যে অবস্থান করলে এমনটি ঘটতে পারে।
এতে মানুষের শরীরে তাপ উৎপাদন বা শোষণের চেয়ে বিকিরণ করে বেশি। সাধারণত মানবদেহের কেন্দ্রীয় তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে চলে গেলে হাইপারথার্মিয়া হতে পারে।
হাজার হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশী ও আশ্রয়প্রার্থীর মূল গমনপথ এখন ইউরোপীয় দেশ ইতালি। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সেখানে অভিবাসীদের নৌকার সংখ্যাও বাড়ছে।
চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত এক হাজার ৭৫১ অভিবাসনপ্রত্যাশী ইতালির বন্দরে অবতরণ করেছেন।