মাগুরার মহম্মদপুরে বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে একটি কালোমুখো হনুমানের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকালে উপজেলার জাঙ্গালিয়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, যশোরের কেশবপুরে কালোমুখো হনুমানের বাস। প্রায়ই খাবারের খোঁজে তারা ট্রাকের উপর চড়ে মাগুরায় চলে আসে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও শিক্ষক কাবুল মিয়া বলেন, কয়েকদিন ধরে এলাকায় একজোড়া কালোমুখো হনুমান দেখা যাচ্ছিল। আজ বিকেলে খাবারের খোঁজ করার সময় বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে একটি হনুমানের মৃত্যু হয়।
এলাকাবাসী মেইন লাইনে বিদ্যুতের তার কভারিংয়ের দাবি জানিয়ে বলেন, মহম্মদপুর উপজেলার পল্লী বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের তারে কভারিং না থাকায় প্রায়ই হনুমানসহ নানা বন্যপ্রাণী ও পাখি বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যায়। এসব প্রাণীর অকাল মৃত্যু রোধে লাইনের বিদ্যুতের তারের কভারিং শুরু করা দরকার।
মহম্মদপুর পল্লী বিদ্যুৎ আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী উপ-মহাব্যবস্থাপক রেজাউল করিম বলেন, বৈদ্যুতিক তার কভারিংয়ের জন্য আর্থিক বরাদ্দ নেই। নিজস্ব তহবিল থেকে এ ধরনের কাজ করা সম্ভব নয়।
মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রামানন্দপাল বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হবে। যাতে পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয় থেকে তার কভারিংয়ের কাজ শুরু করা হয়।
বাংলাদেশ বন অধিদফতরের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা এবং তরুণ বন্যপ্রাণী গবেষক জোহরা মিলা জানান, দেশের তিন প্রজাতির হনুমানের দেখা মেলে যার মধ্যে কালোমুখ হনুমানের (Hanuman Langur) রাত ছাড়া সাধারণত মাটিতেই থাকে। এই প্রজাতির হনুমান প্রায় ২০০ বছর ধরে যশোরের কেশবপুর ও মনিরামপুর অঞ্চলে বসবাস করে আসছে। এদের গড় আয়ু ২০-২৫ বছর। সাধারণত জানুয়ারি থেকে মে এদের প্রজননকাল। স্ত্রী ১৮০ থেকে ২০০ দিন গর্ভধারণের পর একটি বা দুটি বাচ্চা প্রসব। হনুমানের এই প্রজাতিটি গাছের কচিপাতা, বাদাম, শাকসবজি ও ফলমূল খায়। তবে মানুষের কাছাকাছি বসবাস করায় ভাত, রুটি, বিস্কুট ইত্যাদি খাবারেও অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন)-২০১২ অনুযায়ী হনুমানের এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত। তাই এটি হত্যা বা এর কোনো ক্ষতিকরা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।