যুদ্ধ বেধে গেলে রাশিয়া ও ইউক্রেনের পাশাপাশি নানা সংকটে পড়বে পশ্চিমা দেশগুলোও। এ ছাড়া বেড়ে যেতে পারে জ্বালানি তেলসহ নিত্যপণ্যের দাম
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বেধে গেলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ইউক্রেন। রাশিয়ার সঙ্গে সংঘাতে ২০১৪ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত দেশটির আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ২৮০ বিলিয়ন ডলার। ক্রিমিয়া হাতছাড়া হওয়ায় ইউক্রেন জিডিপি হারিয়েছে ৫৮ বিলিয়ন ডলার।
রাশিয়ার ক্ষতিও কম হবে না। যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের অবরোধের মুখে পড়বে তারা। ইউরোপে তেল ও গ্যাস রপ্তানি করতে পারবে না মস্কো। আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং চ্যানেল সুইফট থেকে বের করে দেওয়া হতে পারে রুশ ব্যাংকগুলোকে। এতে আন্তর্জাতিক লেনদেন কঠিন হয়ে পড়বে তাদের ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর।
ক্ষতিগ্রস্ত হবে পশ্চিমারাও। ইউরোপের প্রাকৃতিক গ্যাসের ৪০ শতাংশই জোগান দেয় রাশিয়া। দেশটির জ্বালানি খাতে রয়েছে পশ্চিমা জ্বালানি কোম্পানিগুলোর বিপুল বিনিয়োগ। রাশিয়ার এক তৃতীয়াংশ তেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান রসনেফটের ২০ শতাংশ শেয়ারের মালিক ব্রিটিশ পেট্রোলিয়াম বিপি।
রাশিয়ার প্রথম এলএনজি প্ল্যান্ট শাখালিন ২-এর ২৮ শতাংশ শেয়ারের মালিক ডাচ কোম্পানি শেল। সাখালিন-১ প্লান্টে বিনিয়োগ আছে মার্কিন জ্বালানি প্রতিষ্ঠান এক্সনেরও।
অস্ট্রিয়ার রাইফাইসেন ব্যাংক ইন্টারন্যাশনালের গত বছরের মুনাফার ৪০ শতাংশই এসেছিল রাশিয়া থেকে। হাংগেরির ওটিপি এবং ইউনিক্রেডিট এর ৭ শতাংশ মুনাফা আসে মস্কো থেকে। এ ছাড়া ফ্রান্সের ২৪ বিলিয়ন, অস্ট্রিয়ার ১৭ বিলিয়ন, যুক্তরাষ্ট্রের ১৬ বিলিয়ন, জাপানের ১০ বিলিয়ন ও জার্মানির বিভিন্ন ব্যাংকের ৯ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ আছে রাশিয়ায়। জার্মান মাল্টিন্যাশনাল মেট্রো এজির মুনাফার ১৭ শতাংশ এসেছে দেশটিতে অবস্থিত তাদের ৯৩টি স্টোর থেকে।
সংঘাত শুরু হলে বেড়ে যেতে পারে খাদ্যপণ্যের দাম। রাশিয়া বিশ্বের প্রথম ও ইউক্রেন তৃতীয় বৃহত্তম গম রপ্তানিকারক দেশ। অপরদিকে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম ভুট্টা রপ্তানিকারক ইউক্রেন।
অস্থির হয়ে উঠতে পারে তেলের বাজারও। জে পি মরগান জানিয়েছে, এই সংঘাতের জেরে তেলের দাম উঠে যেতে পারে দেড়শ’ ডলারে। ফলে পুরো বিশ্বের জিডিপি প্রবৃ্দ্ধি কমে যেতে পারে প্রায় এক শতাংশ। পাশাপাশি বিশ্বের মুদ্রাস্ফীতি বাড়িয়ে দিতে পারে সাত দশমিক ২ শতাংশ।