বাড়ির সামনে টিকটক ভিডিও করতে নিষেধ করায় টিকটক পার্টির সদস্যদের হামলায় দৃষ্টি হারাতে বসেছেন গৃহবধূ শামসুন্নাহার বেগম। মারধর করা হয়েছে তার ছেলে ও মেয়েকে।
রোববার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার লালুয়া ইউনিয়নের মুন্সীপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। হামলায় আহত গৃহবধূ সামসুন্নাহার বেগমকে কলাপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার ডান চোখে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে। জখম হয়েছে হাতসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে।
কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জসীম জানান, ঘটনা শোনার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হলেও হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। তবে তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
রোববার সকাল থেকে কলাপাড়ার মুন্সীপাড়া গ্রামের দেলোয়ার হাওলাদারের বাড়ির সামনের রাস্তায় নানা অঙ্গভঙ্গিতে ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা এক মেয়ের সাথে টিকটকের ভিডিও ধারণ করছিলেন আসলাম হাওলাদারসহ কয়েক যুবক। বিষয়টি অস্বস্তিকর হওয়ায় তার বাড়ির সামনে দাড়িয়ে এ ধরনের ভিডিও করতে নিষেধ করেন সামসুন্নাহার।
কিন্তু তার কথা না শুনে ভিডিও করা অব্যাহত রাখে প্রতিবেশী বাড়ির টিকটকাররা। এসময় ছেলে ইমাম বাড়িতে এলে তাকে এ বিষয়টি জানান সামসুন্নাহার। এ নিয়ে টিকটক পার্টির সদস্যদের সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তাদের উপর হামলার ঘটনা ঘটে।
আহত সামসুন্নাহার বেগম জানান, বাড়ির সামনে তাদের ভিডিও করতে নিষেধ করায় প্রথমে তার ছেলের উপর হামলা চালিয়ে তাকে পিটিয়ে জখম করা হয়।
আর আহত গৃহবধূর স্বামী দেলোয়ার হোসেন ও সন্তানরা জানান, তারা নির্মমভাবে মারধর করে মাটিতে ফেলে পা দিয়ে পারা দেয় তার মাকে। লাঠির আঘাতে সামসুন্নাহারের একটি চোখ নষ্ট হওয়ার পথে।
লালুয়া ইউপি চেয়ারম্যান শওকত হোসেন বিশ্বাস জানান, টিকটক করা নিয়ে হামলার ঘটনা শুনে তিনি তাদের আইনি পদক্ষেপ নিতে পরামর্শ দিয়েছেন।
এদিকে ঘটনার পর থেকে টিকটক পার্টির সদস্য আসলাম, বেল্লাল ও সহযোগীরা পালিয়ে যাওয়ায় তাদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
তবে জানা গেছে, এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে এলাকার একটি প্রভাবশালী মহল সালিশ বৈঠকে বিষয়টি ফয়সালা করার চেষ্টা করছে। ভুক্তভোগী পরিবারকে নামমাত্র চিকিৎসা সহায়তা দেয়ার আশ্বাস দিয়ে বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করতে নেমেছে চক্রটি। মঙ্গলবার এ সালিস হওয়ার কথা রয়েছে।
এ ব্যাপারে কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জসীম জানান, হামলার কথা শুনেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। হামলাকারীরা পালিয়ে যাওয়ায় তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা এ ঘটনায় সোমবার দুপুর পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি।