শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫, ১০:১৪ অপরাহ্ন
প্রধান সংবাদ :
অভিযাত্রা যুব কল্যাণ সংস্থার উদ্যোগে, ঈদ বাজার সামগ্রী বিতরণ। বাবুগঞ্জ থানায় নতুন ওসি মো: জহিরুল ইসলাম যোগদান করেন। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকুন: চরমোনাই পীর শনিবার খোলা থাকছে সব সরকারি অফিস জুলাই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়নের পথে যেকোনো বাধাই মোকাবিলা করবো: নাহিদ ইসলাম বরিশালে বিটিসিএলের ৬৭ শতাংশ বিল বকেয়া সরকারি অফিসে দক্ষিণ রাকুদিয়া বাবুগঞ্জে শাজাহান ফকিড়ের দোকানের দরজার দুইটা তালা ভেঙ্গে মালামাল চুরি করেন চোর চক্র  খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে মীরগঞ্জ মুলাদি সেতু নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে। রাকুদিয়া নতুন হাটে মুদি দোকানে চুরি কাশ্মীর হামলার পর চরম উত্তেজনা: ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের টানাপোড়েন

ভ্যালেন্টাইন ভুলিয়ে দিচ্ছে স্বৈরাচার প্রতিরোধের রক্ত পলাশ

একুশে বিডি ডেক্স
  • প্রকাশিতঃ সোমবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২২
  • ৭০ জন নিউজটি পড়েছেন

আজ বসন্ত এবং ভালোবাসা দিবস। কিন্তু ৩৯ বছর আগে এই দিনটি কেমন ছিল এই শহরে? এই দেশে?

এই নগরে ১৯৮৩ সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারিতে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নেমেছিল ছাত্র-যুবারা। দাবি ছিলো শিক্ষা হবে সবার জন্য। শিক্ষা নিয়ে হবে না ব্যবসা। শিক্ষা হবে অসাম্প্রদায়িক। সামরিক শাসক জেনারেল এরশাদের বাহিনী সেই প্রতিবাদ মিছিলে চালায় গুলি। শহীদ হন জাফর, জয়নাল, মোজাম্মেল, কাঞ্চন, দীপালি সহ আরো অনেকে, যারা এখন ভুলে যাওয়া নাম! দেশজুড়ে একদিনেই গ্রেপ্তারের সংখ্যা ছিলো তেরশ’র বেশি ছাত্র। ক্যাম্পাসগুলো হয়েছিলো রক্তাক্ত। স্বাধীনতার পর এতোবড় ছাত্র আন্দোলন দেখেনি দেশ!

এই দেশেই আমরা এখন স্মরণ করি রোমের এক ভ্যালেন্টাইনকে, যিনি স্বৈরাচারী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেছিলেন বলে বলা হয়। নব্বইয়ের পরে আমাদের গণমাধ্যমের কারণেই যিনি ভালবাসার নায়ক হয়ে উঠলেন এখানে। আজ হারিয়ে গেলেন আমাদের নায়কেরা, জাফর-জয়নাল-দীপালিরা!

অথচ এদেশে তো বসন্ত আসার কথা দ্রোহে, বসন্ত আসার কথা প্রেমে!

সময়ের স্রোতে মানুষ অনেক কিছু বিস্মৃত হয়। তাই বলে নিকট অতীতের এত বড় জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ একটা দিন বাংলাদেশের মানুষ ভুলে গেলো কীভাবে? ১৯৮৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন এরশাদ সরকারের মজিদ খান শিক্ষানীতির প্রতিবাদ করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে মৃত্যুবরণ করেন ১১ জন আন্দোলনকারী। তৎকালীন ছাত্রনেতারা একাত্তরকে জানান সেদিনের মোট শহীদের সংখ্যা ছিল পঞ্চাশের কাছাকাছি! গ্রেপ্তার হয়েছিলেন ১৩৩১ জন ছাত্র!

তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী ড. মজিদ খান ১৯৮২ সালের ২৩শে সেপ্টেম্বর একটি নতুন শিক্ষানীতির প্রস্তাব করেন। সেখানে প্রথম শ্রেণী থেকেই আরবি ও দ্বিতীয় শ্রেণী থেকে ইংরেজি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়। উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য মাপকাঠি করা হয় মেধা অথবা পঞ্চাশ শতাংশ ব্যয়ভার বহনের ক্ষমতা।

শিক্ষানীতিতে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী মজিদ খান শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ ত্বরান্বিত করার সুপারিশ করেন। সুপারিশে বলা হয়, শিক্ষার বেতনের ৫০ ভাগ শিক্ষার্থীদের থেকে আদায় করা হবে। রেজাল্ট খারাপ হলেও ৫০ শতাংশ বেতন দিলে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ দেয়ার কথা বলা হয় শিক্ষানীতিতে। এই নীতি ঘোষণার পর থেকেই আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা।

সে বছর ১৭ সেপ্টেম্বর ওই শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনের বিষয়ে একমত হয় ছাত্র সংগঠনগুলো। এরই ধারাবাহিকতায় ১৪ই ফেব্রুয়ারিতে স্মারকলিপি দিতে শিক্ষার্থীরা মিছিল করে সচিবালয়ের দিকে যাবার সময় পুলিশ গুলি চালায়।

সেদিনের সেই মিছিলে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও ছাত্র নেতা শফি আহমেদ। সে সময়ের জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের কর্মী ছিলেন শফি আহমেদ। শফি আহমেদ একাত্তরকে বলেন, সেদিন ঢাকার সব কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের নেমে এসেছিলো রাজপথে। স্বাধীনতার পরে এতো বড় মিছিল আর হয়নি। আমরা মিছিল নিয়ে শিক্ষাভবনে আসার পর পুলিশ এবং অন্যান্য বাহিনী আমাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। কয়েকজন তো স্পটেই মারা যায়। আর অনেককে আহত অবস্থায় তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। তাদের অনেকে মারা যায়। সেসব লাশ মেডিক্যালের মর্গে নিয়ে যায় পুলিশ, তারপর আর খুঁজে পাওয়া যায়নি সেই লাশগুলো।

তৎকালীন ছাত্রনেতা ও পরবর্তীতে ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক হওয়া মোশতাক হোসেন বলেন, ‘আমরা শুধু জয়নালকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারি। কিন্তু চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে সেই মৃতদেহ বটতলায় নিয়ে এসে আমরা বিক্ষোভ করি।’

মোশতাক আহমেদ ও শফি আহমেদ দুজনই মনে করেন সেদিন পুলিশের গুলিতে অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছিলেন। তারা দাবী করেছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বাকি মৃতদেহগুলো গুম করে ফেলে।

সেদিন বিকালে এবং পরের দিনও শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযান চলে বলে জানান শফি আহমেদ। পুলিশ অনেক ছাত্র-ছাত্রীকে গ্রেপ্তার করে নির্যাতন করে। মোশতাক হোসেনকেও গ্রেপ্তার করা হয়। এর কিছুদিন পরে সরকার একটি ঘোষণা দিয়ে শিক্ষানীতিটি স্থগিত করতে বাধ্য হয়।

বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাজেকুজ্জামান রতন একাত্তরকে বলেন, শিক্ষাব্যবস্থা, গণমাধ্যম আর রাজনীতিতে পুঁজিপতি আর মুনাফালোভীদের আধিপত্য বাড়ার সাথে সাথে সময়ের আবর্তনে দেশের মানুষ ১৯৮৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারির ইতিহাসকে ভুলে গেছে। ১৪ ফেব্রুয়ারি এদেশের ছাত্র-জনতার লড়াই-সংগ্রামের ইতিহাসে অন্যতম গৌরবোজ্জ্বল এক অধ্যায়। ১৯৮৩ সালের ঐতিহাসিক ছাত্র আন্দোলন এগিয়ে দিয়েছিল স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নির্মাণের সংগ্রামকে। কিন্তু মধ্য ফেব্রুয়ারির সেই ইতিহাসকে ভুলিয়ে দিতে আমদানি করা হয়েছে ভ্যালেন্টাইন ডে বা ভালোবাসা দিবসের মতো আয়োজন।

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মেহেদী হাসান নোবেল একাত্তরকে বলেন, শহীদের প্রতি যতটুকু মর্যাদা দেয়া দরকার সেই মর্যাদা আমরা দিচ্ছি না। এই দেশে যারা এই শহীদের রক্তের ওপর ভর করে ক্ষমতায় এসেছেন তারা এই স্বপ্নের সাথে বারবার বেঈমানি করেছেন। যেই শিক্ষানীতির জন্য দীপালী, জয়নালরা রক্ত দিয়েছিলেন সেই স্বপ্নের শিক্ষানীতি এখনও আমরা পাইনি। এখনও বাংলাদেশে শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ, শিক্ষার সাম্প্রদায়িকীকরণ, বহুধাবিভক্ত শিক্ষা সবই চলমান আছে।

এদিকে দিনটিকে ‘স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠনগুলো। সকাল ৮টায় শিক্ষাভবনের সামনে ‘শিক্ষা অধিকার চত্বরে’ পুষ্পস্তবক অর্পণ করার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে দিনের কর্মসূচি। সারাদিন ধরেই চলবে আলোচনা সভা ও নানান কর্মসূচী।

একুশে বিডি ডটকম এর জন্য সারাদেশে সংবাদ দাতা নিয়োগ চলছে
যোগাযোগঃ- 01773411136,01778927878 ekusheybd2021@gmail.com

আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন

Salat Times

    Dhaka, Bangladesh
    Saturday, 7th June, 2025
    SalatTime
    Fajr3:44 AM
    Sunrise5:11 AM
    Zuhr11:57 AM
    Asr3:16 PM
    Magrib6:44 PM
    Isha8:11 PM
© All rights reserved © 2019 ekusheybd.com
Theme Customized BY mrhostbd.com
themesba-lates1749691102