করোনার পূর্ণটিকা নেওয়া মায়েদের গর্ভে জন্ম নেওয়া নবজাতকের মারাত্মক কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার শঙ্কা ৬০ শতাংশ কম। মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) মার্কিন রোগ নিয়ন্ত্রণ ও সুরক্ষা বিভাগের (সিডিসি) এক গবেষণা এমন খবর দিয়েছে।-খবর এনডিটিভির
খবরে বলা হয়, আগে থেকেই এমন কিছু কল্পনা করা হয়েছিল—যদিও এতদিন তা বাস্তবে প্রমাণ করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু এখন মার্কিন গবেষণায় দেখা গেছে, গর্ভাবস্থায় মায়েদের নাড়ি ও জন্মের পর বুকের দুধের মাধ্যমে অ্যান্টিবডি নবজাতকের শরীরে স্থানান্তরিত হচ্ছে।
ছয় মাস বয়সী ৩৭৯টি শিশুর ওপর জরিপ চালিয়েছে সিডিসি। ২০২১ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের জানুয়ারিতে তারা ২০টি শিশুরোগ কেন্দ্রে ভর্তি ছিল।
করোনার টিকা নেওয়া মায়েদের সন্তানেরা—যারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে—তাদের ও যারা করোনার টিকা নেয়নি, তাদের সমস্যাগুলো নিয়ে গবেষণা করেছেন গবেষণা প্রবন্ধের লেখকেরা।
বাস্তবিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে গবেষণায় এ ধরনের পরিসংখ্যান পদ্ধতি ব্যবহার হয়ে থাকে—যাতে একই বৈশিষ্ট্যের রোগীদের মধ্যে তুলামূলক পরীক্ষা করা সম্ভব হয়।
সিডিসির গবেষক ডানা মিয়ানি-ডেলম্যান বলেন, কোভিড-১৯ রোগের টিকা নেওয়া মায়েদের শিশুর মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার শঙ্কা ৬১ শতাংশ কম থাকে।
করোনায় সংক্রমিত হয়ে যেসব শিশুর হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে, তাদের মধ্যে ৮৪ শতাংশের মায়েরা টিকা নেওয়া ছিলেন না। একমাত্র মারা যাওয়া শিশুটির মা-ও টিকা নেননি।
কৃষ্ণাঙ্গ ও হিসপানি শিশুর হাসপাতালে ভর্তি হওয়া সংখ্যা আনুপাতিকভাবে অনেক বেশি। ডানা বলেন, মাতৃ-টিকাদানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জায়গাটি হলো এতে নবজাতকেরাও করোনার ভয়াবহতা থেকে সুরক্ষিত থাকে।
গবেষণায় বলা হয়, গর্ভকালের পরে টিকার দুডোজ নেওয়ার চেয়ে যারা আগে নেবেন, তাদের সন্তানেরা বেশি নিরাপদ থাকবে। অর্থাৎ আগে যারা টিকা নেবেন, সেই সব মায়ের সন্তানেরা যেখানে ৮০ শতাংশ সুরক্ষা পাবে, পরে টিকা নেওয়ারা পাবে সেখানে ৩২ শতাংশ।
মা ও শিশুকে রক্ষায় গর্ভকালের যে কোনো সময় টিকা নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ বলে জোর দিয়েছেন গবেষকেরা। তারা বলছেন, যদি একজন নারী গর্ভকালের প্রথম তিন মাসে টিকা গ্রহণ করে, তবে সন্তান জন্ম দেওয়ার পর তার বুস্টার ডোজ নেওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। কিন্তু অন্তঃসত্ত্বাদের জন্য বুস্টার ডোজের পরামর্শ দেওয়া হবে অযাচিত সিদ্ধান্ত।