শুক্রবার, মহররম, শবে বরাত, ঈদে মিলাদুন্নবী, শবে কদর, ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা এবং সরকার নির্ধারিত দিনে অফ শপ, অন শপ ও দেশি মদের দোকান বন্ধ রাখার বিধান রেখে অ্যালকোহল বা মদ উৎপাদন, কেনাবেচা, পান করা, পরিবহন, আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে নিয়মনীতি স্পষ্ট করে প্রথমবারের মতো বিধিমালা করেছে সরকার। সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগ থেকে ‘অ্যালকোহল নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা, ২০২২’ জারি করা হয়েছে। ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮’-এর আওতায় বিধিমালাটি করা হয়েছে।
এতদিন ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮’, ‘অ্যালকোহল নিয়ন্ত্রণ (লাইসেন্স ও পারমিট ফিস) বিধিমালা ২০১৪’, ‘মুসলিম প্রহিবিশন রুল ১৯৫০’ ও ‘এক্সাইজ ম্যানুয়াল (ভল্যুম-২)’ ও বিভিন্ন নির্বাহী আদেশ দিয়ে অ্যালকোহল সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রিত হতো। অনেক ক্ষেত্রেই ছিল অস্পষ্টতা। এতে বিভিন্ন সময়ে নানা জটিলতা সৃষ্টি হতো।
এখন থেকে বিধিমালা অনুযায়ী, মদ কেনাবেচা, পান, পরিবহনের ক্ষেত্রে লাইসেন্স, পারমিট ও পাস নিতে হবে। কোথাও কমপক্ষে ১০০ জন মদের পারমিটধারী থাকলে ওই এলাকায় অ্যালকোহল বিক্রির লাইসেন্স দেওয়া হবে। ২১ বছরের কম বয়সের ব্যক্তি মদপানের অনুমতি পাবেন না। খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে স্যাক্রামেন্টাল ওয়াইন (আঙুরের নির্যাস থেকে তৈরি এক ধরনের মদ) ব্যবহারের জন্য বিশেষ পারমিট দেওয়া যাবে।
বিধিমালায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য চোলাই মদের মহালের সংখ্যা ও অবস্থান নির্ধারণ করে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। মদপানের অনুমতি পাবেন চা বাগানের শ্রমিকরাও। বিধিমালা অনুযায়ী, মদের বার বেলা ১১টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। তবে লেট ক্লোজিং লাইসেন্সের ক্ষেত্রে রাত ২টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে।
বিধিমালায় লাইসেন্স ও অনুমোদন ফি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। সর্বনিম্ন ফি ১৫০ টাকা, আর সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা। ডিস্টিলারি স্থাপনের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ লাখ টাকা। দেশি মদপানের অনুমোদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫০ টাকা। বিলাতি মদপানের অনুমোদন ফি তিন হাজার টাকা। লাইসেন্স ও অনুমোদনের মেয়াদ হবে ১ জুলাই থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত। লাইসেন্স, অনুমোদন ও পাস নেওয়ার প্রক্রিয়ার বিষয়ে বিধিমালায় বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে।