ঠাকুরগাঁওয়ে আধুনিক সদর হাসপাতালের টিকাদান কেন্দ্রে করোনার টিকা নিতে আসা স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটার ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে টিকাদান কেন্দ্রের স্বেচ্ছাসেবকরা শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করেন বলে অভিযোগ করেছে শিক্ষার্থীরা।
স্বেচ্ছাসেবকদের দাবি, বিশৃঙ্খলা আর হুড়োহুড়ি নিয়ন্ত্রণে হাতে লাঠি নিলেও কাউকে পেটানো হয়নি।
এদিকে, লাঠিপেটার ঘটনায় টিকা না নিয়েই হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন অনেক শিক্ষার্থী ।
দুপুরে সরেজমিনে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, টিকাদান কেন্দ্রের বাইরে উপচে পড়া ভিড়। ভেতরে ছাত্র ও ছাত্রীরা আলাদা লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে।
এমনকি ভিড়ের জন্য রক্ষা করা যাচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধিও। শিক্ষার্থীরা গা ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়িয়ে আছে। কারও কারও মুখে নেই মাস্কও।
এসময় মাঝে মাঝেই কেন্দ্রের বাইরে অপেক্ষমান শিক্ষার্থীরা হুড়োহুড়ি করে ভেতরে প্রবেশ করছে। হুড়োহুড়ি নিয়ন্ত্রণে তখন স্বেচ্ছাসেবকরা লাঠিপেটা করছেন।
টিকা নিতে আসা আখানগর উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী শামীমা আক্তার জানান, শুরুতে ঠিকঠাক লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকলেও ভিড় বেশি বেড়ে গেলে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। তখন স্বেচ্ছাসেবকেরা নির্বিচারে তাদের লাঠিপেটা করেন।
শামীমার সহপাঠী নাসিমা বলেন, স্বেচ্ছাসেবকেরা শুধু ছেলেদের নয়, মেয়েদেরও মেরেছে। এসময় আট-দশজন আহতও হয়েছে বলে জানান তিনি।
আখানগর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এহসানুল হক বলেন, একসঙ্গে এতো শিক্ষার্থীকে টিকা দিতে আনা ঠিক হয়নি। কর্তৃপক্ষ এই দায় না নিয়ে উল্টো শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের সিভিল সার্জন নূর নেওয়াজ আহমেদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, লাঠিপেটা হচ্ছে এটা ঠিক না। টিকা নিতে একদিনে বেশি শিক্ষার্থী চলে আসায় তাদের মধ্যে ঠেলাঠেলি হয়েছে। এটা সামাল দিতেই স্বেচ্ছাসেবকরা হাতে লাঠি নিয়েছিলেন।
স্বেচ্ছাসেবকেদের হাতে লাঠি শুনে সেখানে গিয়ে তাদের হাত থেকে লাঠি সরিয়ে ফেলেছেন বলেও জানান সিভিল সার্জন।
উল্লেখ্য, ঠাকুরগাঁও জেলায় এক লাখ ৬২ হাজার ৮৫৯ জন শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত এক লাখ ১৫ হাজার ৫০২ জন শিক্ষার্থীকে প্রথম ডোজ ও ৬২ হাজার ৮৮ শিক্ষার্থীকে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে বলে জানায় সিভিল সার্জনের কার্যালয়।
আর এই ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের টিকাদান কেন্দ্রে বুধবার তিন হাজার ১০০ শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার ওই কেন্দ্রে টিকা নিতে আসা শিক্ষার্থী সংখ্যা পাঁচ হাজার ছাড়িয়ে যায় বলে জানান তারা।