প্রায় ১০ হাজার ইউরোপ প্রবাসী বাংলাদেশিকে পাসপোর্ট প্রদানের দাবিতে শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলা প্রেসক্লাব ইতালির সভাপতি ও অল ইউরোপিয়ান বাংলা প্রেসক্লাবের নির্বাহী কমিটির সদস্য শাওন আহমেদ।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী প্রায় ১০ হাজার অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসী পাসপোর্টে না পাবার কারণে বৈধতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বাংলাদেশিরা ইউরোপে প্রবেশকালে নাম ঠিকানা জন্ম তারিখ এমনকি ধর্ম পরিবর্তন করে থাকে। ফলে তারা পাসপোর্টে পরিবর্তন করতে পারছে না। সরকার আগামী ২৮ এপ্রিলের পর আর কোনো পরিবর্তনের আবেদন গ্রহণ করবে না বলে ইতালিতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মো. শামীম আহসানের বরাত দিয়ে জানানো হয়। এসকল বাংলাদেশিকে মানবিক দৃষ্টিতে পাসপোর্ট পরিবর্তনের সুযোগ দানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অল ইউরোপিয়ান বাংলা প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি ফেরদৌস করিম আখঞ্জী, নির্বাহী কমিটির সদস্য মাহবুব আলম প্রধান, ইতালির কমিউনিটির নেতা নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে শাওন আহমেদ আরও জানান, বাংলাদেশ থেকে লিবিয়া হয়ে বহু টাকার বিনিময় ভূমধ্য সাগর পাড়ি দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন বাংলাদেশিরা ইউরোপে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করছে। তাদের মধ্যে অনেকের সলিল সমাধি ঘটছে ভূমধ্যসাগরে। বেশ কিছু এনজিওর উদ্ধারকারী জাহাজ বাংলাদেশিসহ বিদেশি অবৈধ শরণার্থীদের উদ্ধার করে ইতালির সিসিলি দ্বীপের লাম্পেদুসা সমুদ্রবন্দরে নিয়ে যায়। কখনো কখনো তাদেরকে তীরে নামার অনুমতি দিলেও অধিকাংশ সময়ে দিনের পর দিন এ সকল জাহাজে অভিবাসীদের অবস্থান করতে হয়।
২০২০ সালে ইতালিতে মোট অবৈধ শরণার্থী প্রবেশ করেছে ৪ হাজার ৮০ জন। যার মধ্যে বাংলাদেশের রয়েছেন ৯০৪ জন। এছাড়া ২০২১ সালে ইতালিতে অবৈধ শরণার্থী প্রবেশ করেছে ৬৭ হাজার ৪০ জন। যার মধ্যে বাংলাদেশি রয়েছেন ৭ হাজার ৮২৪ জন। এসকল শরণার্থীকে রাখা হয় শেল্টার হোমে।
এই ১০ হাজার প্রবাসী বাংলাদেশকে পাসপোর্ট প্রদানে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে পাসপোর্ট পরিবর্তনের বিষয়টি পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানানো হয়। অল ইউরোপিয়ান বাংলা প্রেসক্লাব প্রবাসীদের এই সমস্যার সমাধানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরও হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।