প্রায় সাত বছর আগে অবৈধ পথে ফ্রান্স যান নাসির আহমেদ। এর আগে প্রায় ১৫ বছর পেশাদার চুরির সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনি। দেশ বদলালেও পেশা আর বদলাননি। দূর পরবাসে বসেই দেশে নিজের চোর চক্র দিব্যি চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি।
রোববার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানিয়েছে।
রাজধানীর কচুক্ষেত রজনীগন্ধা টাওয়ারে রাঙ্গাপরী জুয়েলার্স থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি প্রায় ৩০০ ভরি সোনা ও টাকা চুরির ঘটনায় চোর চক্রের সদস্য মঞ্জুরুল হাসান শামীমকে (৩৮) গ্রেপ্তার করে ডিবি। শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) গাজীপুর ও মুন্সিগঞ্জে অভিযান চালানোর পর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ সাড়ে ৯ লাখ টাকার অলংকার উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারের বিষয় জানাতেই ছিল এই সংবাদ সম্মেলন। সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।
হাফিজ আক্তার বলেন, ফ্রান্সে বসে চোর চক্র চালান নাসির। ঢাকায় বাসা ভাড়া করে চক্রের সদস্যদের রাখা ও তাদের যাবতীয় খরচের জন্য তিনি বিদেশ থেকে টাকা পাঠান। চুরির পরে টাকা ভাগাভাগি করে নেন চক্রের সদস্যরা। আর এ টাকার সিংহভাগই যেত নাসির আহমেদের পকেটে।
রজনীগন্ধা টাওয়ারে চুরির ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া শামীমের দুলাভাই নাসির। তবে তার বোনের সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেলেও শামীম নাসিরের সঙ্গেই রয়ে গেছেন বলেও জানান ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার।
ডিবি জানায়, রজনীগন্ধা টাওয়ারে চুরির পরিকল্পনা অনুযায়ী, এ চক্রের দুই সদস্য মাসুদ ও ইলিয়াস মিথ্যা নাম ও পরিচয় ব্যবহার করে মার্কেটে নিরাপত্তাকর্মী ও সুইপারের চাকরি নেন। চক্রের আরেক সদস্য শাহীন মাস্টার ওই মার্কেটে একটি দোকান ভাড়া করেন।
এরপর মালামাল তোলার নাম করে তালা ভাঙার সরঞ্জামাদি মার্কেটে প্রবেশ করান তারা।
ঘটনার দিন চক্রের আরও দুই সদস্য শ্রীকান্ত ও তালা ভাঙার মিস্ত্রি রাজা মিয়া মার্কেটে প্রবেশ করেন। পরে সবাই মিলে রাঙ্গাপরী জুয়েলার্সে চুরি করেন।
ডিবি আরও জানায়, সোনার দোকানে চুরির পর সোনা ও টাকা নিয়ে হাসনাবাদে ভাড়া বাসায় যান তারা। পরে শ্রীকান্ত চুরি করা সোনা পূর্বপরিচিত এক সোনা ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে বাসা থেকে পালিয়ে যান।
ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার হাফিজ আক্তার জানান, নাসির আহমেদের বাড়ি বাগেরহাটে। নাসিরসহ এই চোর চক্রের অন্যান্য সদস্যদের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানাসহ কয়েকটি থানায় মামলা রয়েছে।