ছবি: সংগৃহীত
মাহমুদ অপু,বরিশাল:নদী ভাঙন থেকে বরগুনা এবং ভোলার উপকূল রক্ষায় প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার বৃহৎ দুটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অতৈনিক পরিষদের নির্বাহি কমিটি (একনেক)। মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) একনেকের সভাপতি ও প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ প্রকল্প দুটির অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
অনুমোদন পাওয়া প্রকল্প দুটির অর্থনৈতিক আকার বরিশাল অঞ্চলের জন্য এযাবত কালের সর্বোবৃহৎ বলে দাবি পানি উন্নয়ন বোর্ড সংশ্লিষ্টদের। তাছাড়া প্রকল্প দুটি বাস্তবায়ন হলে ভোলা ও বরগুনার উপকূলিয় এলাকায় নদী ভাঙনের চিত্র পাল্টে যাবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
তবে হতাশা কাটছে না বরিশালবাসীর। বিশেষ করে হিজলা, মেহেন্দিগঞ্জ, বাবুগঞ্জ, বাকেরগঞ্জ এবং বরিশাল সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অব্যাহত নদী ভাঙন প্রতিরোধে নেয়া প্রকল্পগুলো এখনো আলোর মুখ দেখছে না। বরিশাল সদর আসনের সংসদ সদস্য পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হওয়া সত্বেও এসব এলাকায় নদী ভাঙন রোডে দ্রুত প্রকল্প অনুমোদন না পাওয়ায় অনেকটাই হতাশাগ্রস্ত এ অঞ্চলের মানুষ।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ‘মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর শেরে বাংলা নগরী এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহি কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন।
সভায় সর্বমোট প্রায় আট হাজার ৮০৪ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয় সম্বলিত ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দেয় একনেক। যার মধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় বরিশাল বিভাগের বরগুনা এবং ভোলা জেলার দুটি প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। দুটি প্রকল্পই নতুন। আর প্রকল্প দুটি একনেকের সভা পর্যন্ত পৌঁছতে অন্তত পাঁচ বছরের অধিক সময় লেগেছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড।
একনেকের সভায় অনুমোদিত প্রকল্প দুটির মধ্যে সব থেকে বড় প্রকল্প ভোলা জেলার জন্য। এ প্রকল্পটির আর্থিক ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৯২ কোটি ৭০ লাখ টাকার। যার মধ্যে জেলার মনপুরা উপজেলায় এক হাজার ১৫ কোটি ৭০ লক্ষ এবং চরফ্যাসনের মুজিবনগর ইউনিয়নের উন্নয়নে ৭৭ কোটি টাকা। এ প্রকল্পের আওতায় মুজিব নগর ও মনপুরায় উপকূলীয় এলাকায় বাঁধ পুনর্বাসন, নিস্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন ও তীর সংরক্ষণ (প্রথম পর্যায়) করা হবে।
এছাড়া বরগুনার জন্য নেয়া অপর প্রকল্পটির ব্যয় নির্ধারিত হয়েছে ৮২৬ কোটি ৪৯ লাখ টাকার। এ প্রকল্পের আওতায় বরগুনা জেলাধীন পোল্ডার ৪১৬ এ, ৪১৬ বি এবং ৪১৭ এ পুনর্বাসন এবং জেলাধীন বেতাগী উপজেলা শহরসহ অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ অংশ বিষখালী ও পায়রা নদীর ভাঙন হতে প্রতিরক্ষা করা হবে।
স্থানীয় সংসদ সদস্যদের প্রচেষ্টায় এ দুটি প্রকল্প একনেকে অনুমোদন পেয়েছে। অনুমোদনের কাগজ হাতে পাওয়ার পরে টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হবে। সূত্রটির মতে প্রকল্প দুটি বাস্তবায়ন হলে দুই অঞ্চলের উপকূলীয় বিশাল একটি এলাকা ভাঙন প্রতিরোধে কার্যকরি ভূমিকা রাখবে।
অপরদিকে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের বরিশাল নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ‘কীর্তনখোলা, সুগন্ধা, সন্ধ্যা, মেঘনা, পায়রা, আড়িয়াল খাঁসহ বিভিন্ন নদীর ভাঙন রোধে অন্তত আটটি প্রকল্প রয়েছে তাদের। যার মধ্যে লেবুখালীর পায়রা নদীর জন্য নেয়া প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। বাকি প্রকল্পের এয়েকটি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং একনেকের কাছে যেতে অপেক্ষমান রয়েছে।
গত প্রায় পাঁচ বছর ধরে প্রকল্পগুলোর কাজ চলমান রয়েছে। এসব প্রকল্প অনুমোদন পেলে নদী ভাঙন থেকে বরিশাল জেলার উপকূল রক্ষাপাবে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড সংশ্লিষ্টরা।