ইউক্রেনের দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণার জেরে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) মস্কোর বিরুদ্ধে প্রথম ধাপে নিষেধাজ্ঞা দেন তিনি।
নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার পর এক টুইট পোস্টে ট্রুডো বলেন, রাশিয়া অবৈধভাবে ইউক্রেনে অবস্থান নিয়েছে। এটি গণতন্ত্রের ওপর হামলা এবং বিশ্ব শান্তির জন্য হুমকি। এরপর তারা সার্বভৌম আরও রাষ্ট্রে হামলা করতে ভুলবে না। বন্ধু রাষ্ট্র ও সহযোগীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে রাশিয়ার ওপর প্রথম দফায় অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলো।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে কানাডা যেসব নিষেধাজ্ঞা দিল-
১. রাশিয়ার ‘স্পেশাল ইকোনোকে মেজারস রেগুলেশনস’ ও ইউক্রেনের ‘স্পেশাল ইকোনোমিক মেজারস’ অধীনে নিষেধাজ্ঞাগুলো আরোপ করা হয়েছে।
২. নিষেধাজ্ঞাগুলো রাশিয়ার ডুমা প্রদেশে প্রযোজ্য হবে। প্রদেশটি দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের স্বাধীনতার স্বীকৃতির পক্ষে ভোট দিয়েছে।
৩. ইউক্রেনীয় সরকার দ্বারা দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলগুলোতে লেনদেন পরিচালিত হবে। এর বাইরে অন্য কোনো লেনদেনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। কানাডিয়ানদের ওই এলাকায় নির্দিষ্ট কিছু লেনদেনে লিপ্ত হতে সতর্ক করা হয়েছে।
৪. নিষেধাজ্ঞার আওতায় রাশিয়ান সার্বভৌম ঋণের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ লেনদেন নিষিদ্ধ থাকবে।
৫. কানাডা দুটি রাশিয়ান আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করবে যাতে মস্কোর আক্রমনাত্মক পদক্ষেপে অর্থায়ন করার ক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
৬. এ ছাড়া অটোয়া উত্তর আটলান্টিক চুক্তি সংস্থার (ন্যাটো) সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনীর অতিরিক্ত ৪৬০ জন কর্মী মোতায়েন করবে।
৭. প্রয়োজনে কানাডিয়ান সশস্ত্র বাহিনীর অতিরিক্ত আরও তিন হাজার ৪০০ সদস্যকে ন্যাটোর সেনাদের সঙ্গে মোতায়েন করবে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেন সংকট: এবার রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
এদিকে রাশিয়ার দুটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার কথাও ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
তিনি বলেন, রাশিয়ার ভিইবি ব্যাংক ও রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর ব্যাংক প্রোমসভায়াজের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলো। এ ছাড়া যেসব ধনকুবেরের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে তারা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের সঙ্গে ব্যবসা করতে পারবেন না। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের থাকা ওই ব্যক্তিদের সম্পদ জব্দ করা হবে।
এর আগে রাশিয়ার পাঁচটি ব্যাংকের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাজ্য। ব্যাংক ৫টি হলো- রোসিয়া, আইএস ব্যাংক, জেনারেল ব্যাংক, প্রোমসভায়াজ ব্যাংক এবং ব্ল্যাক সি ব্যাংক।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, এগুলো রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ ব্যাংক। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে এই নিষেধাজ্ঞা জারির ঘোষণা করেন। সেই সঙ্গে গেনেডি তিমচেনঙ্কো, বরিস রোটেনবার্গ এবং ইগোর রোটেনবার্গ নামে রাশিয়ার তিন ব্যক্তির সব সম্পদের ওপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।