রাশিয়ার চালানো সামরিক অভিযানের শুরু থেকে প্রায় ২৮০০ রুশ সেনাকে ইউক্রেনীয় সৈন্যরা হতে করেছেন বলে দাবি করেছেন ইউক্রেনের ডেপুটি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হান্না মালিয়ার। শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) এক ফেসবুক পোস্টে তিনি এই দাবি করেন।
তিনি আরও দাবি করেন, শুক্রবার স্থানীয় সময় বিকেল ৩টা পর্যন্ত ইউক্রেনের সেনাবাহিনী রাশিয়ার ৮০টি ট্যাংক, ৫১৬টি সাঁজোয়া যান, ১০টি বিমান ও সাতটি হেলিকপ্টার ধংস করেছে।
আল-জাজিরার খবরে এ কথা বলা হলেও এই সংখ্যার সত্যতা যাচাই করেনি সংবাদমাধ্যমটি।
এদিকে ইউক্রেনের এমন দাবির বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি মস্কো।
এদিকে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর উচিত দেশের ক্ষমতা নিয়ে মস্কোর সঙ্গে আলোচনায় বসা বলে মন্তব্য করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এমন মন্তব্য করেছেন।
এ সময়ে রাশিয়ার বেসামরিক নাগরিকদের ‘মানবঢাল’ হিসেবে ব্যবহারের জন্য নতুন নাৎসি ও কিয়েভ সরকারকে দায়ী করেন তিনি।
পুতিন বলেন, ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর উচিত না—তাদের শিশু, স্ত্রী ও প্রিয়জনদের ‘মানবঢাল’ হিসেবে ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া। প্রতিবেশী দেশের সামরিক বাহিনীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, নিজের হাতে ক্ষমতা নিয়ে নেও।
তার মতে, একদল ‘মাদকাসক্ত ও নতুন নাৎসির’ চেয়ে আলোচনার জন্য সামরিক বাহিনী অনেক ভালো। নতুন নাৎসিরা কিয়েভে শিকড় গেড়েছে। তারা সাধারণ নাগরিকদের জিম্মি করে রেখেছে।
এর আগে ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের নির্দেশ দেওয়ার পর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পরিষ্কার করে দিয়েছেন, প্রতিবেশী দেশটিতে তিনি আরও নিয়ন্ত্রণ চাচ্ছেন। পাশাপাশি পশ্চিমা দেশগুলো ও ন্যাটোরও মুখোমুখি দাঁড়াতে চেয়েছেন। বিশ্লেষকদের ধারণা, এই অভিযানের মাধ্যমে কিয়েভের পশ্চিমাপন্থীদের ক্ষমতাচ্যুত করে সেখানে রুশপন্থী সরকারকে স্থলাভিষিক্ত করতে চাচ্ছেন পুতিন।
এদিকে কিয়েভের স্বেচ্ছাসেবীদের হাতে ১৮ হাজার মেশিন গান তুলে দেওয়ার কথা জানিয়েছে ইউক্রেন। রাশিয়ার সেনারা কিয়েভে প্রবেশ করছে, এমন খবরের পর তাদের প্রতিহত করতেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ভিদিম দেনেচিঙ্কো বলেছেন, স্বেচ্ছাসেবীদের হাতে ১৮ হাজার মেশিন গান তুলে দেওয়া হয়েছে। যারা শত্রুর হাত থেকে রাজধানী কিয়েভকে রক্ষা করতে চায়।
তিনি বলেন, ইউক্রেনীয় সামরিক সরঞ্জাম কিয়েভকে রক্ষা করার জন্য প্রবেশ করছে। আমি কিয়েভের বাসিন্দাদের বলছি- দয়া করে এগুলোর ছবি ধারণ করবেন না। আমাদের শহরকে রক্ষা করার জন্য এটা প্রয়োজন।
এদিকে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেছেন, ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী যদি আত্মসমর্পণ করে, তবে মস্কো আলোচনার জন্য প্রস্তুত। নিপীড়ন থেকে দেশটিকে মুক্তি দিতেই অভিযান চালানো হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।