রাশিয়ার অভিযানের পর মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে ইউক্রেনে। দেশটিতে তৃতীয় দিন শনিবারেও (২৬ ফেব্রুয়ারি) হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া। এ পর্যন্ত ইউক্রেনের বেশকিছু অঞ্চল নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে রুশ বাহিনী।
ওয়াশিংটনের ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়্যারের বিশ্লেষণ অনুসারে, চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ রাজধানীর বাইরে উত্তরাঞ্চলের কিছু অংশ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে রাশিয়ান বাহিনী। তারা ক্রিমিয়ান উপদ্বীপ দখলের পর উত্তরে খেরসন শহরের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
সিএনএন প্রকাশিত ছবিতে দেখা যাচ্ছে— সামি শহর, খারকিভ, লুহানস্ক, ডোনেতস্ক ও মারিওপল শহরও এখন রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে।
অন্যদিকে, কিয়েভের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ছবি প্রকাশ করেছে প্ল্যানেট ল্যাবস পিবিসি। স্যাটেলাইটের ছবিতে দেখা গেছে, কিয়েভের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর অক্ষত অবস্থায় আছে। তবে রানওয়েসহ পুরো বিমানবন্দর যানবাহন দ্বারা অবরুদ্ধ রাখা হয়েছে। বলা হয়েছে, রুশ বিমান অবতরণ এবং বিমানবন্দর ব্যবহার করা থেকে বিরত রাখতে এ অবরোধ করা হয়।
প্রসঙ্গত, প্ল্যানেট ল্যাবস পিবিসির প্রকাশিত ছবিগুলো রাশিয়ান আক্রমণ শুরু হওয়ার আগে ইউক্রেনজুড়ে নেওয়া পদক্ষেপের গুজব যাচাই করে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক হামলায় এখন পর্যন্ত ১ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে ধারণা করছে দ্য ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটি (আইআরসি)। সংস্থাটির জরুরি বিতরণের পরিচালক ল্যানি ফোর্টিয়ার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।
শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দেওয়া বিবৃতির বরাতে এনবিসি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেসামরিক নাগরিক, হাসপাতাল ও স্কুলের মতো বেসামরিক অবকাঠামো এবং নারী ও শিশুসহ দুর্বল গোষ্ঠীর প্রতি এ সংকটের সময়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন মেনে চলার জন্য তাগিদ দিচ্ছে আইআরসি।
পাশাপাশি অবিলম্বে ইউক্রেন থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহারের প্রস্তাব রাখা হয়। তবে সেই প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে রাশিয়া। অন্যদিকে মস্কোর কর্মকাণ্ডকে আগ্রাসন বলতে অস্বীকৃতি জানিয়ে ভোট দেওয়া থেকে বিরত থেকেছে চীন।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ চলছে বিভিন্ন দেশে। যুক্তরাষ্ট্র, বেলজিয়াম, কানাডা, তুরস্কসহ কয়েকটি দেশে রুশ হামলার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছেন কয়েক হাজার মানুষ। ইউক্রেনে সেনা অভিযানের জবাবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা।