একদিকে ইউক্রেনের শহরগুলো নিজেদের দখলে নিচ্ছে রুশ সেনারা, অন্যদিকে চলছে আন্তর্জাতিক নেতাদের জটিল হিসাবনিকাশ। এরইমধ্যে কেউ কেউ আছেন যারা সকল সমীকরণের বাইরে গিয়ে দেশকে রক্ষা করতে একবারও পিছপা হননি। এমনকি বিয়ের পর হানিমুনে না গিয়ে সরসরি উপস্থিত হয়েছেন যুদ্ধের ময়দানে। এমনই এক যুগল আরিয়েভা এবং ফুরসিন।
ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানের ঠিক কয়েক ঘণ্টা পরেই বিয়ে করেন দেশটির নাগরিক ইয়ারিনা আরিয়েভা এবং স্যাভিয়াতোস্লাভ ফুরসিন। ২০১৯ সালে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তাদের পরিচয়। তারপর প্রেম। ঠিকভাবেই চলছিলো সব। কিন্তু তারপরই এক কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হলেন তারা।
তারা জানতেন যে, ঠিক কি ঘটতে চলেছে তাদের দেশে। তাই সময় নষ্ট না করে নতুন এ দম্পতি বিয়ের প্রথম দিনেই রাইফেল হাতে নেমেছেন যুদ্ধের মাঠে।
আরিয়েভা এবং ফুরসিন উভয়েই টেরিটোরিয়াল ডিফেন্স ফোর্সের যুক্ত হয়েছেন। এটি ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর একটি শাখা যা বেশিরভাগ স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে গঠিত। বিয়ের পর এই সশস্ত্র দম্পতি তাদের রাজনৈতিক দল, ‘ইউরোপীয় সলিডারিটি’র পার্টি অফিসে চলে যায়।
শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন বলছে, আগামী মে মাসের বিয়ে করারা পরিকল্পনা করেছিলেন তারা। কিন্তু সামনের দিনে কি ঘটবে তা কেউ জানেন না।
আরিয়েভা বলেন, এই মুহূর্তে, আমরা এখানে আছি এবং আমরা যা করতে পারি তা করছি। অনেক কাজ করার আছে। তবুও আমি আশা করি সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, কিছু পরিস্থিতি থাকে যখন আপনাকে এগোতে হয় দেশকে রক্ষার জন্য। আপনি এগোতে পারেন এবং আপনার দেশকে রক্ষা করতে পারেন। এখন এমনই এক পরিস্থিতি চলছে।
এর আগে প্রায় এক মাসের উত্তেজনা শেষে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে সেনা অভিযান পরিচালনার ঘোষণা দেন। বৃহস্পতিবারে সকালে টেলিভিশনে প্রচারিত হওয়া এক ভাষণে পুতিন পূর্ব ইউক্রেনের সেনাদের আত্মসমর্পণ করার আহ্বান জানান এবং যেকোনো ধরনের রক্তপাতের জন্য ইউক্রেন দায়ি থাকবে বলে সতর্কও করেন তিনি।
এরইমধ্যে ইউক্রেনে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ শক্ত করেছে রুশ সেনারা। অন্যদিকে পাল্টা প্রতিরোধ চালিয়ে যাচ্ছেন আরিয়েভা এবং ফুরসিনের মতো মানুষরা।