বরিশালের মুলাদীতে প্রকাশ্য দিবালকে এক পল্লী চিকিৎসকের জমিতে নির্মাণাধিন বসতঘর ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছে প্রতিপক্ষরা। গত শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার ৭নং কাজিরচর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ কাজিরচর এলাকায় ফাহিমা আক্তার পপির নেতৃত্বে বসতঘর ভাঙার ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় ধারনকৃত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনার পর পরই মুলাদী থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
পাশাপাশি বসতঘর ভাঙার ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত পল্লী চিকিৎসক আউয়াল কাজী নানু। অভিযুক্ত ফাহিমা আক্তার একই এলাকার জানে-আলমের স্ত্রী। তাদের দাবি ওই জমির মালিক তারা। সেখানে অন্যায়ভাবে তোলা ঘর ভেঙে ফেলা হয়েছে।
ডা. নোবেল জানান, ‘ওই জমির ক্রয় সূত্রে মালিক তারা। কিন্তু জানে আলম ও তার স্ত্রী ওই জমির মালিকানা দাবি করেন। তাছাড়া জমিতে ঘর তুলতে হলে মোটা অংকের টাকাও চান তারা। এ নিয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে মামলা করেন পল্লী চিকিৎসক আউয়াল কাজী নান্নু। পরে গ্রাম্য আদালত আউয়াল কাজী নান্নুকে জমির মালিকানা এবং দখল বুঝিয়ে দেন।
কিন্তু গ্রাম আদালতের এই রায় মানতে নারাজ ফাহিমা আক্তার পপি ও তার পরিবার। যে কারণে গ্রাম আদালতে দায়ের হওয়া মামলা মিমাংসা বা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য থানায় প্রেরণ করা হয়। নোবেল বলেন, ‘থানা থেকেও বিষয়টি সমাধানের জন্য বলা হয়। কিন্তু ফাহিমা আক্তার তা মানছেন না।
এর ধারাবাহিকতায় গত শনিবার ফাহিমা আক্তার পপি ১০-১৫ জন লোক নিয়ে বিরোধীয় জমিতে নির্মিত ঘরের অবকাঠামো প্রকাশ্যেই ভেঙে গুড়িয়ে দেন। তবে ঘটনার সময় বাড়িতে পুরুষ লোক না থাকায় কেউ তাদের বাধা দিতে পারেননি। অবশ্য বাড়িতে থাকা নারীরা তাদের নিষেধ করা সত্যেও ভাঙার হাত থেকে ঘরটি রক্ষা করতে পারেননি। উল্টো ঘর ভাঙতে নিষেধ করায় পরিবারের সদস্যদের হুমকিসহ গালাকাল করেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানে-আলম অথবা তার স্ত্রী ফাহিমা আক্তার পপির বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে মুলাদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জিয়াউল আহসান বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। উভয় পক্ষই ওই জমির মালিকানা দাবি করছেন। এর মধ্যে যারা ঘর ভেঙেছে তাদের দাবি ওই জমির মালিক তারা এবং তাদের দখলেই আছে। অপরপক্ষ অন্যায়ভাবে সেখানে ঘর তুলছিলো।
খবর পেয়ে সেই ঘর তারা ভেঙে ফেলেছেন। আবার যাদের ঘর ভাঙা হয়েছে তাদের দাবি ক্রয় সূত্রে ওই জমির মালিক তারা। প্রতিপক্ষরা তাদের ক্রয় করা জমিতে ঘর তুলতে দিচ্ছে না।
ওসি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে দুই পক্ষকেই মামলা করতে বলা হয়েছে। আদালত যার পক্ষে রায় দিবেন সেই জমির দখল বুঝে পাবে। এতে পুলিশ সহযোগিতা করবে। যদিও বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার দুই পক্ষকে নিয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বসনেব বলে শুনেছি। সেখানে কাগজপত্র দেখে চেয়ারম্যান সমাধান করে দিবেন।