যুদ্ধ ইউক্রেনে সীমাবদ্ধ থাকলেও উত্তেজনা বাড়ছে গোটা ইউরোপে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, লড়াই দীর্ঘ হলে বাড়বে পরিসরও। বিশ্লেষকরা বলছেন, রণক্ষেত্রের সামান্য ভুলে সহিংসতা ছড়াবে অন্যান্য দেশে। কারণ ইউক্রেনের পশ্চিমে ন্যাটো বাহিনীর অবস্থান। অনাকাঙ্খিত সংঘাত এড়াতে রুশ বাহিনীর সাথে গোপন হটলাইন চালু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যুদ্ধ দীর্ঘ হলে পুতিনও বিপদে পড়বেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ন্যাটোভুক্ত দেশ না হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও সামরিক জোট ন্যাটো ইউক্রেনে সরাসরি কোনো সেনা পাঠায়নি। তবে ইউক্রেনের সীমান্তঘেঁষা সব দেশেই মোতায়েন আছে তাদের হাজার হাজার সেনা। এই যুদ্ধ দীর্ঘ হলে ভুগোত হবে পুতিনকেও, এমনটিই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এরই মধ্যে ইউক্রেনে আগ্রাসনের বিরোধীতা করে রাশিয়ার ভেতরেও শুরু হয়েছে পুতিন বিরোধী আন্দোলন।
সীমান্তঘেঁষা পোল্যান্ড, এস্তোনিয়া, লাটভিয়া ও লিথুয়ানিয়ায় নতুন করে সেনা পাঠিয়েছে ন্যাটো। আগে থেকেই জার্মানি, স্লোভাকিয়া, হাঙ্গেরি, রোমানিয়া ও বুলগেরিয়ায় অবস্থান করছে জোটের সেনারা। কৃষ্ণসাগরের আশপাশে আছে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ।
বিশেষজ্ঞদের শঙ্কা, রুশ বাহিনীর অসাবধানতায় এসব দেশে অবস্থানরত বিদেশি সেনাদের ওপর হামলা হলে সূচনা হতে পারে বড় ধরনের যুদ্ধের। এমন পরিস্থিতির শঙ্কায় আগেভাগেই রুশ বাহিনীর সাথে বিশেষ হটলাইন চালু করেছে বাইডেন প্রশাসন।
বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক সেনা কর্মকর্তা বেন হজ বলেন, আমি ২০১৪ থেকে ১৭ সাল পর্যন্ত ইউরোপে ছিলাম। তাই সেখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কে অনেকটা অনুমান করতে পারছি। যেহেতু পূর্ব ইউরোপে যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটো সেনারা ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে, তাই এমন হামলার ঝুঁকি খুবই বাস্তব।
কিয়েভে পুতিন বাহিনী অভিযান চালানোর আগেই অনেকে সতর্ক করে বলেন, দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি হতে যাচ্ছে গোটা ইউরোপে।
যুক্তরাজ্যের নিরাপত্তা বিশ্লেষক জেমস নিক্সি বলেন, পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে ইউক্রেনের সাথে এই যুদ্ধ চলতেই থাকবে। সংঘাত দীর্ঘায়িত হলে কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়বে রাশিয়া। কারণ যেভাবে সবকিছুর দাম বাড়ছে, তাতে রিজার্ভ থেকে চলতে হবে পুতিন সরকারকে। তাই নিজেদের স্বার্থেই যুদ্ধ বন্ধ করা উচিত রশিয়ার।
একই আশঙ্কা ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুলেয় ম্যাকরনেরও। তিনি বলেন, এই যুদ্ধ স্থায়ী হবে। এমনকি যে সব সংকট তৈরি হবে তাও বহুদিন থাকবে। তাই আমাদের অবশ্যই এ জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।