মাতৃভূমিকে রক্ষায় অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছেন ইউক্রেনের অনেক সাধারণ মানুষ। পরিবার পরিজনকে অন্য দেশে পাঠিয়ে দিয়ে যুদ্ধের মাঠে অবস্থান করছেন তারা।
এর মধ্যেই সংঘাতপূর্ণ ইউক্রেন ছাড়ার সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। পোল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশের সীমান্তে বাড়ছে আশ্রয়প্রত্যাশীদের ভিড়। এ অবস্থায় ইউক্রেনের শরণার্থীদের আগামী তিন বছরের জন্য আশ্রয় দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
বাবাকে সংঘাতপূর্ণ ইউক্রেনে রেখে পোল্যান্ডে যাওয়ার সময় কান্নায় ভেঙে পড়ে এক শিশু। মাতৃভূমিকে রক্ষায় তার বাবা দেশে রয়ে গেলেও পরিবারকে পাঠিয়ে দিয়েছেন নিরাপদ আশ্রয়ে।
সেই শিশু মার্ক জানায়, আমি আমার বাবাকে কিয়েভে রেখে যাচ্ছি, তিনি ইউক্রেনের সেনাদের সাহায্য করবেন বলে আমাদের সঙ্গে আসেননি।
শিশু মার্কের মতোই, নিজেদের ভিটেমাটি ছেড়ে অনিশ্চয়তার পথে যাত্রা করছেন ইউক্রেনের অনেক সাধারণ মানুষ। ছোট্ট শিশু থেকে শুরু করে বয়স্ক সবার মনেই ভর করেছে অজানা আতঙ্ক। রুশ-ইউক্রেন সংঘাত বাড়তে থাকায় বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে অন্য দেশে পাড়ি জমানোর চেষ্টায় তারা।
এক ইউক্রেনীয় জানান, নিজ দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া কতটা কষ্টের তা আমরা বুঝতে পারছি। আমাদের সঙ্গে আজ যা হচ্ছে তা ইউরোপের যে কোনো দেশের নাগরিকের সঙ্গেই হতে পারে। পুতিন যে কোনো জায়গায় অভিযান চালাতে পারেন।
একদিকে যখন দেশ ছাড়ার হিড়িক, তখন মাতৃভূমি রক্ষায় অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছেন অনেক ইউক্রেনীয়। অংশ নিয়েছেন রুশ সেনাদের প্রতিরোধের লড়াইয়ে। এদের মধ্যে, অনেকেই অস্ত্র হাতে তো দূরের কথা, কখনও চোখেও দেখেননি।
ইউক্রেনীয় জানান, দুই দিন আগেও আমি জানতাম না, আমি এখানে থাকবো। আমি অস্ত্র চালাতে পারতাম না। আর এখন দেখেন লড়াই করছি।
চলতি সপ্তাহেই রুশ সেনাবাহিনীকে প্রতিরোধ করতে ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের অস্ত্র হাতে তুলে নেয়ার আহ্বান জানান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তার ডাকে সাড়া দিয়ে যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন হাজারো সাধারণ মানুষ।
এদিকে, ইউক্রেনে চলমান সামরিক অভিযানের মধ্যেই পারমাণবিক অস্ত্রের দায়িত্বে থাকা বাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি রাখার নির্দেশ দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। পুতিনের এমন নির্দেশনাকে বিপজ্জনক ও দায়িত্বজ্ঞানহীন বলে আখ্যা দিয়েছে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটো। আর ইউক্রেনে রুশ অভিযানকে ন্যায্যতা দিতেই পুতিন এমন হুমকি দিচ্ছেন বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
এর মধ্যেই, ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহের ঘোষণা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। একই সঙ্গে রুশ বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধ ঘোষণা করেছে পশ্চিমা দেশগুলো। এ অবস্থায় সংঘাত বন্ধে রাশিয়ার সঙ্গে শর্তহীন আলোচনায় রাজি ইউক্রেন। স্থানীয় সময় আজ সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে বেলারুশ সীমান্তে এ বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।