ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের চিফ অব স্টাফের এক উপদেষ্টা বলেছেন, রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ সম্ভবত মে মাসের শুরুর দিকে শেষ হয়ে যাবে। এর কারণ হিসেবে তিনি বলছেন, এই সময়ের মধ্যে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য সম্পদের অভাব বোধ করবে মস্কো।
মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) এক ভিডিও বার্তায় এসব কথা বলেছেন চিফ অব স্টাফের উপদেষ্টা ওলেক্সি আরেস্তোভিচ, যা প্রকাশ করেছে ইউক্রেনের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম।
ওলেক্সি বলেন, আমি মনে করি, মে মাসের শেষে নয়, শুরুর দিকেই রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের একটি শান্তি চুক্তি হওয়া উচিত। দেখা যাক, এর আগেও হতে পারে। আমি শুধু সর্বশেষ সম্ভাব্য তারিখের কথা বলছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা এখন মাঝ রাস্তায় রয়েছি। এক বা দুই সপ্তাহের মধ্যে সেনা প্রত্যাহার, শান্তি চুক্তিসহ সবকিছু হবে অথবা আমরাও রুশ সেনাদের ওপর একইভাবে হামলা শুরু করব। তারপর হয়তো কোনো সমঝোতা হবে।
এর আগে, সমঝোতার জন্য সোমবার (১৪ মার্চ) চতুর্থ দফায় বৈঠকে বসেন ইউক্রেন ও রাশিয়ার প্রতিনিধিরা। তবে কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই এ বৈঠক শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা এবং আলোচক মাইখাইলো পোডোলিয়াক জানিয়েছেন, ‘কৌশলগত বিরতির’ পর মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) পুনরায় আলোচনা শুরু হবে।
ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত এ বৈঠকের একটি ছবি প্রকাশ করে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির উপদেষ্টা এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যোগাযোগ কঠিন হলেও তা চলমান। উভয় পক্ষ সক্রিয়ভাবে তাদের নিজস্ব অবস্থান প্রকাশ করেছে। তবে ভিন্ন রাজনৈতিক ব্যবস্থাই আমাদের মতবিরোধের মূল কারণ।’
নাম প্রকাশ না করে আরেক শীর্ষ আলোচক জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলেকে জানিয়েছেন, ইউক্রেন অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি, রুশ সেনা প্রত্যাহার এবং রাশিয়ার সঙ্গে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা চায়। এটি হলেই কেবল আঞ্চলিক সম্পর্ক এবং রাজনৈতিক পার্থক্য নিয়ে আলোচনা ফলপ্রসূ হতে পারে।
এদিকে দুই পক্ষের আলোচনার মধ্যেও ইউক্রেনের বিভিন্ন এলাকায় হামলা-সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। হামলার ১৯তম দিনে সোমবার (১৪ মার্চ) রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে কিয়েভের উত্তরাঞ্চলীয় ওবোলন জেলার একটি নয় তলা আবাসিক ভবনে গোলাবর্ষণের অভিযোগ করেছে ইউক্রেন। দুই পক্ষের আলোচনার মধ্যেই চালানো এই হামলায় দুজন নিহত ও তিনজন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। এর মধ্য দিয়ে ইউক্রেনের রাজধানীও আর্টিলারি হামলার মুখোমুখি হওয়া সর্বশেষ শহর হয়ে উঠতে পারে বলে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ইউক্রেনের জরুরি মন্ত্রণালয়ের পোস্ট করা এক ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, হামলার শিকার হওয়া ভবনটি আগুনে পুড়ে যাওয়ার দৃশ্য। এ সময় রুশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে স্থানীয়দের স্লোগান দিতেও দেখা গেছে। ভবনটি উত্তর শহরতলির কয়েক কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত যেখানে সরকারি বাহিনীর সেনারা গত কয়েক দিন ধরে রাশিয়ান বাহিনীকে প্রতিরোধের চেষ্টা করে আসছে।