তিনি বাঙালি জাতির পিতা। বাংলাদেশ নামক মানচিত্রে তার নামটি আছে উজ্জ্বল হয়ে। একটি জনগোষ্ঠীকে স্বাধীনতা কেবল নয়, দিয়েছিলেন তিনি মুক্তির মন্ত্র। মহান এ দেশ নায়কের জন্মতিথি তাই তাকে স্মরণের-নতুন প্রত্যয়ে বলীয়ান হওয়ার। টুঙ্গিপাড়ার সেই মুজিব এরপর ইতিহাসের ধারা বেয়ে উঠে দাঁড়ালেন, হলেন বাঙালি জাতির পিতা।
বড় লালঝুঁটি মোরগটা রাতের অন্ধকার ভেঙে ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিদিনকার ডাক শুরু করেছে। দূরে মসজিদে আজানের ধ্বনি বেজে চলছে। সাধারণ মানুষ সূর্যের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যেন জেগে উঠছে। আর অদূরে যে মধুমতী নদী তার ছলাৎ ছলাৎ শব্দ যেন নিয়ে যায় অন্য এক ভুবনে। বাংলার অন্য সব গ্রামের মতো এ পল্লীর একটি নাম আছে। ফরিদপুর জেলাধীন মহকুমা গোপালগঞ্জের একটি সাধারণ গ্রাম টুঙ্গিপাড়া।
শহর থেকে দূরে নিভৃত পল্লীর ছায়া ঢাকা এ গ্রামে এক সন্ধ্যা রাতে সম্ভ্রান্ত মধ্যবিত্ত মুসলিম পরিবারে গৃহ-প্রাঙ্গণ আনন্দ কোলাহলে মুখরিত করে জন্ম নিল একটি শিশু। দিনটি এখন থেকে ১০২ বছর আগের ১৭ মার্চ ১৯২০।
পৃথিবীর আলোয় দুচোখ মেলে তাকানোর মুহূর্ত থেকে শিশুটিকে তার জনক জননী সানন্দে খোকা ডাকতে শুরু করল। পাড়া প্রতিবেশীরা নাম দিল মুজিব। শেখ পরিবারে জন্মেছিলেন বলে পুরো নাম হলো শেখ মুজিবুর রহমান।
টুঙ্গিপাড়ার সেই মুজিব ইতিহাসের ধারা বেয়ে উঠে দাঁড়ালেন, হলেন বাঙালি জাতির পিতা। সাত মার্চ এল বাঙালির জীবনে, বাংলার বন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দিশাহীন জাতিকে নতুন প্রত্যয়ে জাগিয়ে দিলেন।
বাংলাদেশ স্বাধীন হলো। জাতির স্থপতি তখন দেশনায়ক। দুর্বার এক গতিতে তিনি দেশকে নিয়ে যাচ্ছিলেন স্বপ্নের সীমায়। হঠাৎ অন্ধকার। এল ১৫ আগস্ট। সপরিবারে হত্যা করা হলো জাতির পিতাকে। সেই থেকে অমর তিনি। আছেন তিনি বাঙালির পরম স্বজন হয়ে চেতনার উজ্জ্বল স্মারক হয়ে।